আজ (বুধবার) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া ২২ জনকে পিএইচডি ও ১৭ জনকে এমফিল ডিগ্রি দেওয়া হবে।
সমাবর্তনে মূল বক্তা হিসেবে থাকবেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট) ডিগ্রি প্রদান করা হবে। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মুক্তিযোদ্ধা উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক এবং বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়া ইউজিসির চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ উপস্থিত থাকবেন।
সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে সাজসাজ রব। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ২৫ হাজার আসনবিশিষ্ট প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কার কাজ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের গাউন ও টুপি পরে ছবি তোলার ধুম পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিশাল এ আয়োজনের বাজেট প্রায় ১৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ফি থেকে এসেছে সাড়ে ৬ কোটি টাকা। বাকি অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি ও বিভিন্ন স্পন্সরদের সহায়তায় সংগ্রহ করা হয়েছে। আয়োজন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১৯টি উপকমিটি কাজ করছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার জানান, নিয়মতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থী–কেন্দ্রিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতেই এই বড় পরিসরের সমাবর্তন আয়োজন করা হয়েছে। এটাই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবর্তন।
যারা পাচ্ছেন ডিগ্রি: ২০১১-২০২৩ সালের মধ্যে অর্জিত বিভিন্ন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি চিকিৎসা বিজ্ঞান, নার্সিং, মেডিকেল টেকনোলজি, ফ্যাশন টেকনোলজি এবং অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরাও এই সমাবর্তনে ডিগ্রি পাবেন।
সমাবর্তন সংক্রান্ত নির্দেশনা: দুপুর ১টার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে হবে; পরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। মোবাইল ফোন ছাড়া অন্য কিছু বহন নিষিদ্ধ। অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না। শিশু ও বৃদ্ধদের না আনার অনুরোধ। ১০০টি বাস শহরের নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আনবে ও পরে ফিরিয়ে নেবে। এক নম্বর গেট থেকে শুধুমাত্র শাটল বাস চলবে; ব্যক্তিগত গাড়ি ঢুকতে পারবে না। অভিভাবকরা শাটল বাস ব্যবহার করতে পারবেন, তবে ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য ড্রাইভার আনার অনুরোধ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান সম্প্রচার: বিভিন্ন পয়েন্টে এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি অনুষ্ঠান দেখানো হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের গাউন ফেরত দিয়ে নিজ নিজ বিভাগ থেকে সনদ ও গিফট সংগ্রহ করতে হবে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ পর্যন্ত চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে যথাক্রমে ১৯৯৪, ১৯৯৯, ২০০৮ ও ২০১৬ সালে।