বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র করলে আমরা দাঁতভাঙা জবাব দেব। একটি দল একটি গোষ্ঠী পেছনের দরজা দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা চাচ্ছে আগস্ট এর পূর্বের ন্যায় দেশকে একটি অস্থতিশীল পরিবেশ করতে। জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্তের বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

আমরা দুটি রোড ম্যাপ চেয়েছি একটি হচ্ছে নির্বাচনের রোডম্যাপ অপরটি হচ্ছে সংস্কারের রোডম্যাপ। তার পরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

আমরা চাই একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। হুন্ডা-গুন্ডা দিয়ে নির্বাচন করার পদ্ধতি চলবেনা। দেশের জন্যগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেয়ার অধিকার চায়। জগণের প্রকৃত সরকার যেন নির্বাচিত হয় তার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের জনগণ যেন জামায়াতকে আস্থার জায়গা মনে করে সেভাবে নেতাকর্মীদেরকে কাজ করার আহ্বান জানান জামায়াতের এই নেতা। নেতাকর্মীদেরকে দেশের জনগণের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোন কাজের সাথে যুক্ত না থাকার আহ্বান জানান তিনি। ইসলামী বিপ্লব সাধনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার উপর জোর দেন তিনি।

গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৪টা কুমিল্লা নগরীর ফান টাউন মিনলায়তনে কুমিল্লা মহানগরী জামায়াত আয়োজিত ইউনিট সভাপতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জামায়াত মনোনীত কুমিল্লা (৬)সদর আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ এর সভাপতিত্বে নগর জামায়াতের সেক্রেটারি মু. মাহবুবর রহমান এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান। কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মু. মোছলেহ উদ্দিন।

এটিএম মা’ছুম আরো বলেন, বিগত ১৮ বছর জাতি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেনি। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয়করণ করা হয়েছিল। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পৌত্তলিকভাবে প্রণয়ন করেছিল। অবৈধভাবে বিদেশে টাকা পাচার করে দেশটাকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে পাশের দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছিলো আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, তাদের অপকর্ম রাতদিন বললেও শেষ হবেনা। ৫৭ জন চৌকস সেনা অফিসারকে হত্যা করে, হেফাজতে ইসলামের শত শত আলেমদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং জামায়াতের নেতাদেরকে বিদেশে রায় লিখে এনে ফাঁসির নামে বিচারিক হত্যা মঞ্চস্থ করেছিলো। স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার বাহিনী এই দেশের নারী, পুরুষ, শিশু ও সাধারণ ছাত্রদেরকে গণহারে হত্যা করে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করে। ছাত্রজনতার প্রতিরোধে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেছেন, তৃণমূল সংগঠন মজবুত হলে দল শক্তিশালী হয়। সংগঠনের জনশক্তি বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। চতুর্মুখী সমস্যা মোকাবিলা করার মতো সামর্থ্য অর্জন করার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করা উচিত।

সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর জামায়াতে সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মু. কামারুজ্জামান সোহেল, কাউন্সিলর মোশারফ হোসাইন, নাছির আহম্মেদ মোল্লা, ছাত্রশিবির কুমিল্লা মহানগরী সভাপতি মোহাম্মদ হাসান, মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক জাকির হোসাইন, আমীর হোসাইন ফরায়েজী, মোহাম্মদ হোসাইন, দেলোয়ার হোসাইন সবুজ, অধ্যাপক মফিজুর রহমান, মজিবুর রহমান, লুৎফুর রহমান খান মাসুম মহানগর জামায়াতের শূরা সদস্য মু রফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম। সম্মেলনে কুরআনের শিক্ষা পেশ করেন মহানগর জামায়াতের শূরা সদস্য ড. আবরার আহমেদ।