নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তমালতলা মোড় বাজার জামে মসজিদে মাগরিব নামাজের পর নিয়মিতভাবে কুরআন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। স্থানীয় মুসল্লিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এ কর্মসূচির আওতায় মাঝে মাঝে কুরআন ও হাদীসভিত্তিক আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়।

তবে সম্প্রতি এ ধর্মীয় শিক্ষা কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৩নং বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম রব্বানী গতকাল (রবিবার) সন্ধ্যায় মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, এই মসজিদে জামায়াতে ইসলামী কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও হুমকি দিয়ে বলেন, জামায়াতের কোনো কর্মসূচি হলে তা প্রতিহত করা হবে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও জামায়াতের এক স্থানীয় কর্মী জানান, “আমরা আছরের নামাজ শেষে মসজিদে অবস্থান করছিলাম। তখন গোলাম রব্বানী এসে আমাদের উদ্দেশ্য করে এসব হুমকিমূলক কথা বলেন।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম রব্বানী সংগ্রামকে বলেন, “আমি এমন কোনো কথা বলিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।”

ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাগাতিপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন সংগ্রামকে বলেন, “গোলাম রব্বানী এখন বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতা নন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে যা বলেছেন, তার দায়-দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। তার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।”

বিএনপির স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, গোলাম রব্বানী তার উশৃঙ্খল আচরণ ও সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলার কারণে পূর্বে ওয়ার্ড সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।

এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাটোর জেলার উপপরিচালক মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “মসজিদে ধর্মীয় আলোচনা ও ইসলামী শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্পূর্ণ বৈধ। তবে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যক্রম সেখানে করা যাবে না। ধর্মীয় স্থানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অনুচিত।”

মসজিদের মতো পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং কুরআন শিক্ষা কার্যক্রমে বাধাদানের ঘটনাটি স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তাদের মতে, ধর্মীয় শিক্ষা ও ইবাদতের স্থানকে রাজনৈতিক বিতর্কে জড়ানো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ধর্মীয় সহনশীলতার পরিপন্থী।