সাইফুল্লাহ তারেক, শিল্পাঞ্চল (খুলনা) সংবাদদাতা : পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই),বাংলাদেশ পুলিশ, ঢাকা, অ্যাডিশনাল ইন্সপেক্টর জেনারেল (অ্যাডিশনাল আইজি) মোঃ মোস্তফা কামাল বলেছেন“ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশ মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। পুলিশের দায়িত্ব শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা নয়-- বরং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, মাদক প্রতিরোধ, নারী ও শিশু সুরক্ষা এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও পুলিশের ভূমিকা অপরিহার্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স থেকে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা আমাদের জাতীয় গর্ব। আজকের নতুন প্রজন্ম সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গিকারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি নবীন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন তোমরা সেই প্রজন্মের অংশ, যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে উন্নতি, শৃঙ্খলা ও মানবিকতার পথে। আমি বিশ্বাস করি, তোমাদের মধ্য থেকেই ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। যারা জনগণের আস্থা অর্জন করে " জনতার পুলিশ" হিসেবে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করবে। পুলিশের মূল শক্তি হল জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা। জনগণকে শ্রদ্ধা করো, তাদের পাশে থেকো, তাদের সেবাকে নিজের দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করো। তবেই বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জল হবে, জনগণ পাবে এক সত্যিকারর জনবান্ধব পুলিশ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ অংশ গ্রহণ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পুলিশের পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও সততার কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি আমাদের সবার গর্বের বিষয় এবং তোমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।

তিনি ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার মীরেরডাঙ্গা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের ৫৯তম ট্রেইনি রিক্রট কনস্টেবল(টিআরসি) ব্যাচের বর্ণাঢ্য ও মনোজ্ঞ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। প্রধান অতিথি পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, শ্রেণীভেদে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় ও কর্মজীবনে আইনি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে এবং সুখী ও সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ট্রেনিং রিক্রুট কনস্টেবলদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনামূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তিঁনি পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, "ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা শ্রেণি নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও আইনি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।" তিনি নবীন পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্ব, সততা ও সর্বোচ্চ দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।’’

এ সময় মঞ্চে তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট ডিআইজি মোঃ মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, বিপিএম(বার)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি টিআরসিদের মৌলিক প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি হিসেবে চৌকস, একাডেমিক ও মাঠ বিষয়ে শ্রেষ্ঠ টিআরসি শেখ আবু তুরাব, মাসকেট্রিতে শ্রেষ্ঠ টিআরসি মোঃ শাকিল হোসেনের হাতে সম্মাননা ট্রফি তুলে দেন।

সমাপনী কুচকাওয়াজে মোট ৫৪৬জন টিআরসি শিক্ষানবিশ পুলিশ সদস্য মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে কুচকাওয়াজে অংশগ্রহন করেন। সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ ইনেন্সপেক্টর আঃ মালেক হাওলাদার।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮ টায় পর প্রধান অতিথি খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে পৌছালে পিটিসি’র কমান্ড্যান্ট ডিআইজি মোঃ মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, বিপিএম (বার) তাঁকে অভ্যার্থনা জানান।

সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জাহানাবাদ সেনানিবাস, খুলনার কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী সাজ্জাদ হোসেন, পিএসসি, রেঞ্জ ডিআইজি, খুলনার মোঃ রেজাউল হক, পিপিএম এবং কেএমপি, খুলনার পুলিশ কমিশনার মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রশিক্ষণার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে প্রধান অতিথি সিআরসিদের মনোমুগ্ধকর, আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন আর্মস ম্যানুভারিং ড্রিল ও আন-আর্মড কমব্যাড বিশেষ প্রদর্শনী উপভোগ করেন।