উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: শেখ এম এ মতিনের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সকাল দশটায় তার অবহেলায় আবুল কাশেম নামে এক কৃষকের গরুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এতে ডাক্তারের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী গরুর মালিক।
সম্প্রতি আবুল কাশেম ও তার নুরুল আমিন দেড় মাস বয়সী একটি অসুস্থ গরু নিয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যান। এসময় তারা অফিসে ডা: আব্দুল মতিনকে না পেয়ে তার মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি গরুটি নিয়ে তার বাসার সামনে যেতে বলেন ওই কৃষককে। পরে কৃষক আবুল কাশেম গরু নিয়ে ডাক্তার আব্দুল মতিনের বাসার সামনে গিয়ে তাকে ফোন দিলে তিনি তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন। অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও না ডাক্তার না আসায় বাসার পিওনকে দিয়েও খবর পাঠান তারা। এতো কিছুর পরেও ডাক্তারের কর্ণপাত হয় না সেদিকে। অপেক্ষারত অবস্থায় আবুল কাশেমের গরুটির ডাক্তারের বাসার সামনে মৃত্যু হয়।
কৃষক আবুল কাশেম ও তার ছেলে নুরুল আমিন বলেন, সকাল ৯টায় ডাক্তারকে ফোন দিলে তিনি তার বাসায় যেতে বলেন। সেখানে গিয়ে খুব চেষ্টা করি ডাক্তারকে বাইরে আনতে তবুও তিনি বের হন না। তার অবহেলার কারণে আমার গরুটি মারা গেলো। তিনি ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধির নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন গরু মারা যাচ্ছে শুনেও তিনি গরুটি দেখতে আসেননি। গরুটি মারা যাওয়ার পরও খবর পাঠালে তিনি বাইরে আসেননি।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে সেবা নিতে আসা কয়েকজন সেবাগ্রহীতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, প্রাণী সম্পদ অফিসে ডাঃ এম এ মতিন যোগদানের পর থেকেই সেবার মান নি¤œমুখী। তিনি সময় মতো অফিসে আসেন না। তিনি অফিসে না বসে ব্যক্তিগত চেম্বারে বসে রোগী দেখেন। হাসপাতালে গরু ছাগল নিয়ে আসলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বিকেলে দেখা করতে বলেন। অফিসে এসে নামমাত্র দু’একটা গরু ছাগল দেখলেও তার মূল টার্গেট থাকে ব্যক্তিগত চেম্বারে পাঠানো।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মূল্যের ওষুধ লেখার অভিযোগও করেন অনেকে। কয়েকজন কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গরু ছাগলের সামান্য রোগেও তিনি অধিক মূল্যের ওষুধ লিখে থাকেন। এ কারণে আমরা এখন উপজেলা পশু হাসপাতালে আসতে ভয় পাই। ডাক্তার এম এ মতিনের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে প্রাণী সম্পদ অফিসে চিকিৎসার মান উন্নত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা শেখ এম এ মতিনের মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার মন্তব্য জানা যায়নি।