করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় চট্টগ্রাম নগরে আবারও শুরু হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। আজ বুধবার থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ফাইজার বুস্টার ডোজ প্রদান শুরু হবে। শুরুতে ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক নাগরিক এবং প্রসূতি নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই টিকা দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমাম হোসেন জানান, “প্রাথমিকভাবে নগরবাসীর মধ্যে বয়স্ক ও গর্ভবতীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা টিকাদান কার্যক্রম শুরু করছি। ধাপে ধাপে আরও শ্রেণি-পেশার মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে।”
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরীকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিকভাবে ৩০০ ডোজ করে ফাইজার টিকা পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ভায়াল থেকে ছয়টি ডোজ টিকা প্রদান সম্ভব। এ ছাড়া টিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রচারণা চালানো হবে বলেও স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।
টিকা মজুত থাকলেও সাড়া নেই গ্রামাঞ্চলে : গত ২৭ মে চট্টগ্রামে পৌঁছায় ফাইজারের ৬৭ হাজার ডোজ টিকা, যা সংরক্ষণ করা হয়েছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ইপিআই সংরক্ষণাগারে। এরপর জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে ৩০০ ডোজ করে বিতরণ করা হয়। জুনের প্রথম সপ্তাহে কিছু উপজেলায় টিকাদান শুরু হলেও জনগণের আগ্রহ অনেকটাই কম।
ইপিআইয়ের তত্ত্বাবধায়ক জয়নাব বেগম বলেন, “আমরা প্রয়োজনীয় টিকা সরবরাহ করেছি। কিন্তু জনগণের আগ্রহ আশানুরূপ নয়। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত টিকা রয়েছে, তবে এগুলো আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে।”
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আমরা প্রচার চালাচ্ছি, কিন্তু মানুষ টিকা নিতে আসছে না।”
কে নিতে পারবেন এই টিকা?
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, ফাইজারের এই ডোজ নেওয়ার জন্য আগেই একটি বা দুটি ডোজ গ্রহণকারীরা উপযুক্ত। এমনকি যারা পূর্বে কোনো টিকা নেননি, তাঁরাও এই বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। ১২ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী সবাই টিকা গ্রহণের যোগ্য।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এই টিকা সবার জন্য উন্মুক্ত। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং আরও আসার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেরাও টিকা নিচ্ছেন, সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।”
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে ইসি
স্টাফ রিপোর্টার: নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী অতীতে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়েছে এবং নিবন্ধন পেয়েও ভোট পর্যবেক্ষণ করেনি তাদের নিবন্ধনও নবায়ন করবে না ইসি।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানায়, পর্যবেক্ষণ নীতিমালা সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন কেবল তা জারি করার পালা। নতুন এ নীতিমালা জারি হলে ২০২৩ সালের নীতিমালাটির আর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। ফলে আগের সংস্থাগুলোর নিবন্ধনও বাতিল করা হতে পারে। পূর্বের নীতিমালায় পর্যবেক্ষক হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমান ছিল, নতুন নীতিমালায় পর্যবেক্ষক হতে হলে এইচএসসি বা সমমান পাস হতে হবে। আর সব যোগ্যতা আগের মতোই থাকছে।
নিবন্ধন প্রক্রিয়া অংশে নতুন নীতিমালায় ৪.৬ নামে নতুন একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে। আর এতে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে যেসব পর্যবেক্ষক সংস্থা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তাদের নিবন্ধন দেওয়া যাবে না। আবার অন্য একটি জায়গায় বলা হয়েছে, নিবন্ধন পাওয়ার পর একটি জাতীয় ও চারটি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করলে পরবর্তী সময়ে সেই সংস্থার নিবন্ধন নবায়ন করা হবে না।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নীতিমালাটি জারি হলে ইতোপূর্বে পাওয়া অনেক সংস্থারই নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ কমে যেতে পারে। এমনকি অনেক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলও হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, কিছু কিছু পর্যবেক্ষক তো বাতিল হবেই। যদি কমিশন মনে করে সবগুলো বাতিল হবে। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত সংস্থা রয়েছে ৯৬টি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। এতে ২০২৩ সালে নিবন্ধন পাওয়া সংস্থা সংস্থাগুলোর পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিবন্ধন বাতিল হতে পারে।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রথা শুরু করে ইসি। সে সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল। ওই নির্বাচনে দেশী পর্যবেক্ষক ছিল এক লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৪ সালে ৩৫টি সংস্থার আট হাজার ৮৭৪ জন পর্যবেক্ষক ভোট দেখেছেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৮টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮১টি দেশী সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৯৬টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮০টির মতো সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট দেখেছেন।