নীলফামারী সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, ফ্যাসিবাদের জননী হিসেবে শেখ হাসিনা দেশের সম্মান নষ্ট করেছে, বিদেশেও বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদাকে ভুলন্ঠিত করেছে। নিউইয়কের জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টার সফর সঙ্গী এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা ডিম নিক্ষেপ করে তারা শুধু তাকে আঘাত করেনি, বরং তারা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সম্মানকে ভুলন্ঠিত করেছে। এমকি সেখানে তাকে জুলাই সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের জুলাই যোদ্ধা হিসেবে স্লোগান দেয়। তাহলে বুঝা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনও অনুশোচনা আসে নাই। তারা বাংলাদেশেও ফ্যাসিজম কায়েম করেছে, বিদেশেও বাংলাদেশের ভাবমুর্তি বিনষ্ট করছে। আমরা দাবি করব তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তার বিচার তরান্বিত করতে হবে।
গতকাল বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখা আয়োজিত আল-হেলাল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত নীলফামারী-২ (সদর) আসনের দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনটা ১৪, ১৮ ও ২৪ মতো হওয়ার আশংকা মনে করেন মানুষ। এই ৩টি নির্বাচনে বাংলাদেশের ৪ কোটি তরুন ভোট দিতে পারে নাই। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই যেন ভোট দেন। তিনি বলেন দেশবাসী দেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে ভোট দিয়েছে। সেখানে ৮০ভাগ ভোট পড়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যন্য। এই ধরনের জাতীয় নির্বাচনেরও আকাক্সক্ষা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ পোষণ করেন।
মাওলানা আব্দুল হালিম পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোন মনোনয়ন বাণিজ্য থাকবে না। এটা দলের জন্য, দেশের জন্য ও রাজনীতির জন্যও লাভ। এজন্য আগামীর নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই দিতে হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
মাওলানা আব্দুল হালিম আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চায়। নতুন বাংাদেশে আমীরে জামায়াতের স্লোগান হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ ও চরিত্রবান মানুষ প্রয়োজন। ভোটাররাই ঠিক করবে আগামী দিনে এই নতুন বাংলাদেশে কারা দেশ চালাবে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ কারা গঠন করবে। ৩৬ এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আকাক্সক্ষা কারা বাস্তবায়ন করবে। তিনি বলেন নির্বাচনী কাজে আমাদের সকলকে ভূমিকা পালন করতে হবে। ভোটারদের কাছে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেয়ার মেসেজ দিতে হবে। আমাদের প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছে আমাদের আবেদন পেশ করতে হবে।
নীলফামারী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে দায়িত্বশীল কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিসদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল সহকারি পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দীন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমীর ও নীলফামারী-১ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ড.খায়রুল আনাম ও নীলফামারী-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ। কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক ছাদের হোসেন, প্রভাষক আব্দুল কাদিম, প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ও নীলফামারী সদর উপজেলা আমীর মাওলানা আবু হানিফা শাহ ।