কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার কুমারখালীর গড়াই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ড্রেজিং করা ইজারাকৃত দেড় লাখ ঘনমিটার বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা মৌজায় বালু লুটের এমন ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে গত ৪ অক্টোবর ইজারাদার রাকিবুল ইসলাম থানায় জিডি করেছেন। জিডি নম্বর ১৩৪।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৩ জুন গড়াই নদীর ড্রেজিংকৃত বালু বিক্রয়ের জন্য কারিগরি উপ-কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে কয়া ও রায়ডাঙ্গা মৌজায় ৬ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার বালু বিক্রয় করে অপসারণের দরপত্র আহবান করে পাউবো। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পাঁচ কোটি ১৭ লাখ টাকায় ইজারা পাই কয়ার মেসার্স প্রিয়াংকা ব্রিকস। প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা জমার শর্তে ইজারাদার বালু বিক্রি শুরু করেন।

এদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ১২ সেপ্টেম্বরর বালু বিক্রি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন শেষে বালু অপসারণ বন্ধ করে দেয়। কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য ঠিকাদার এসকেবেটর, পেলোডার, ড্রাম ট্রাক নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। ঠিকাদারের অনুপস্থিতিতে স্থানীয়রা ড্রেজার বসিয়ে বালু লুট শুরু করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বালু লুট করে কয়া ইউনিয়নের রায়াডাঙ্গা ইদগাহ, রায়ভাগা গোরস্থানে এবং বাণিজ্যিকভাবে অন্যত্র বিক্রি করেছে প্রভাবশালীরা। যার বাজার মূল্য ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।

সরেজমিন দেখা যায়, রায়ডাঙ্গা গোরস্থানের পিছনে দিকে গড়াই নদীতে বসানো রয়েছে দুইটি অবৈধ ড্রেজার। পাইপের সাহায্যে বালু ফেলা হচ্ছে আমবাগানে। ভরাট করা হয়েছে রায়ডাঙ্গা ঈদগাহ মাঠও। এ সময় ড্রেজার পরিচালনাকারী হাসেম আলী বলেন, মাসখানেক হল নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলছি। এতোদিন ঈদগাহ ও গোরস্থানে দিছিলাম। প্রতি ফিট ৪টাকা দরে সাইদুলের আমবাগানে দেওয়া হচ্ছে।

গেল একমাসে ২৫ হাজার ঘন ফিট বালু বিক্রি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মাসুদ রানা বলেন, এতোদিন আমরাই বালু তোলার বিরোধীতা করেছি। কিন্তু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে বালু তোলা হচ্ছে।

ইজারাদার রাকিবুল ইসলাম জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা ব্যক্তিগত সুবিধা না পেয়ে ১২ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করে বালু বিক্রি বন্ধ করেছিলেন।

কিন্তু তারাই এখন ইজারাকৃত বালু লুট করে বিক্রি করছে। এতোদিনে দেড় লাখ ঘনমিটার বালু লুট করেছে তারা। যার বাজার মূল্য ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। তবে তিনি কোনো প্রভাবশালীর নাম প্রকাশ করেননি।

এই বালু লুটের ঘটনায় জিডির কথা স্বীকার করে কুমারখালী থানার ওসি খন্দকর জিয়াউর রহমান বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বালু ইজারা দিয়েছে পাউবো। বালু লুটের ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।