স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রতিহত করার জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যদি কোনো অপরাধে জড়ান, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল বুধবার সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “গাজীপুর একটি শিল্পনগরী, এখানে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে, মাদকেরও ব্যাপকতা আছে। এসব সমস্যা সমাধানে আলোচনা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে, নির্বাচন যেন ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর হয়। নির্বাচনে কোনো ধরনের হুমকি নেই। আওয়ামী লীগের ঢাকা কর্মসূচি প্রতিহত করার বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এই বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন একটি যৌথ প্রক্রিয়া। জনগণ, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায়ই এটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে কোনো বাধা থাকবে না।
গাজীপুরে পুলিশের জনবল ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে পুলিশের সংখ্যা কম। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত সদস্য যোগ করা হয়েছে এবং নির্বাচনের আগে আরো পুলিশ মোতায়েন করা হবে। জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, “জামিন দেওয়া আদালতের এখতিয়ার, আমাদের নয়। তবে জামিন পাওয়ার পর কেউ যদি অপরাধে জড়ায়, তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকার প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের লেখালেখির কারণেই গুজব রটানো অনেক কমেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ছড়ানো মিথ্যা রটনা প্রতিরোধে আপনারাই প্রধান ভূমিকা রাখছেন। সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে গুজব কার্যকরভাবে থামানো সম্ভব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক সময় মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা যদি সত্য ঘটনা প্রচার করেন, তাহলে সমস্যার সমাধান সহজ হবে। পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা অনেক কিছু বলবে। তবে তারা যেন কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে না পারে, সেজন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিচ্ছি, এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. নাফিজা আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়া। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান, গাজীপুর সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানগণ।