বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে ব্রয়লার মুরগি ও কিছু সামুদ্রিক মাছের দাম কমলেও সবজির বাজারে স্বস্তির দেখা নেই। বর্ষাকালে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অধিকাংশ সবজির দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী। তবে ডিম, মাংস ও মুদি পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর বাজার ঘুরে এ চিত্র উঠে আসে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে এসেছে ১৪৫-১৫৫ টাকায়। তবে অলিগলির দোকানে এখনও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, দেশি মুরগি, সোনালি মুরগি, লেয়ার জাতের মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৫৮০ টাকা, সোনালি ২৮০-৩১০ টাকা এবং লেয়ার ২৬০-২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের দাম জাতভেদে প্রতিটি ৬০০-৭০০ টাকা। গরুর মাংস ৮০০-৯৫০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১২০০-১২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১৩০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকা এবং হাঁসের ডিম ২৬০ টাকা। সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কিছু জনপ্রিয় প্রজাতির দাম কমেছে। যেমন, লইট্যা মাছ এখন ১২০-১৪০ টাকা প্রতি কেজি (আগে ছিল ১৮০-২২০ টাকা)। পোয়া, করতি, সুরমা, রূপচাঁদা, কোরালসহ আরও কিছু মাছের দাম কেজিতে অন্তত ৫০ টাকা করে কমেছে। রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৬০০ টাকা, কোরাল ৭৫০-৯০০ টাকা ও জাটকা ৫৫০ টাকা কেজি দরে। তবে ভরা মৌসুমেও ইলিশ এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশ ১২০০-১৬০০ টাকা এবং বড় ইলিশ ২০০০-২২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাষের মাছের মধ্যে রুই ৩০০-৫৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪৫০, বেলে ৮০০-১২০০, কালিবাউশ ৩৫০-৭০০, চিংড়ি ৯০০-১৪০০, কাঁচকি ৪০০, কৈ ২৫০-৩০০, পাবদা ৪০০-৬০০, শিং ৫০০-১২০০, টেংরা ৫০০-৮০০, বোয়াল ৭০০-১২০০, চিতল ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছের দামে বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি।

সবজির বাজার এখনও ক্রেতাদের কাঁদাচ্ছে। বর্ষার প্রভাবে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় অধিকাংশ সবজির দাম বাড়তি। কেবল কাঁচামরিচের দাম কমেছে-পূর্বের ২৫০ টাকা থেকে কমে এখন ১২০-১৩০ টাকা কেজি। অন্যদিকে, কাঁকরোল, বরবটি, পটল, করলা, ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়, বেগুন ৭০, গাজর ৮০, চায়না গাজর ১৩০, লাউ ও পেঁপে ৫০, শিম ৮০, বাঁধাকপি-ফুলকপি ৮০ টাকা, কচুর লতি ও কচুরমুখী ৭০, শালগম ও মূলা ৬০ টাকা কেজি দরে। আলুর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের জাত ২৫ টাকা এবং বগুড়ার লাল আলু ৩৫ টাকা কেজি। মিষ্টিকুমড়া ৩৫, ধনেপাতা ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের বাজারেও দামে হেরফের রয়েছে-কচু শাক ৪০, পুঁই শাক ৪০, লাল শাক ৫০ এবং মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা কেজি। চালের দাম এখনও চড়া। মিনিকেট ও আতপ চালের দাম ব্র্যান্ডভেদে ৮০-৯০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠেছে। স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৭ টাকায় এবং ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০-৬২ টাকায়। মুদি পণ্যের বাজার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০-২০০, ভারতীয় আদা ১২০, চায়না আদা ১৮০-২০০ টাকা। ডালের মধ্যে ছোট মসুর ১৩০, মোটা মসুর ১১০, বড় মুগ ১৪০, ছোট মুগ ১৭০, খেসারি ১০০, বুট ১১০, মাষকলাই ১৮০, ছোলা ১০০, ডাবলি ৬০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

বাদামের মধ্যে কাজু ১৭০০ টাকা, পেস্তা ২৭০০, কাঠবাদাম ১২২০, কিশমিশ ৬০০-৭০০, দারুচিনি ৫২০, লবঙ্গ ১৪০০, সাদা গোলমরিচ ১৬০০, কালো গোলমরিচ ১৩০০, জিরা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত পোলাও চাল ১৩০-১৫০ টাকা ও খোলা পোলাও চাল ১১০-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। চিনি ও ময়দার বাজারেও পরিবর্তন নেই। প্যাকেট সাদা চিনি ১২৫ টাকা, খোলা সাদা চিনি ১২০, খোলা লালচিনি ১৪০ এবং প্যাকেট লালচিনি ১৭০ টাকা। দুই কেজি ময়দা ১৪০ টাকা, আটা ৯০ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯০-১৯৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা। খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২৫০ টাকা।