মোঃ লাভলু শেখ, লালমনিরহাট : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) লালমনিরহাটের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে রোগীর সেবা, খাদ্য বরাদ্দ ও ওষুধ সরবরাহে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে। রোববার ১৮ মে দুপুরে কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ওই অভিযানটি পরিচালিত হয়। দুদকের টিম হাসপাতালের স্টোর রুম, ওষুধের গুদাম এবং রোগীদের খাবার সরবরাহ ব্যবস্থা পরিদর্শন করে। তদন্তে উঠে এসেছে, প্রতিদিন রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ৯০ গ্রাম খাবারের পরিবর্তে মাত্র ৩০ থেকে ৫০ গ্রাম সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও সরকারি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের হিসাব-নিকাশে বড় ধরনের অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। অভিযানকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মোকাদ্দেম এবং আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সামিরা উপস্থিত ছিলেন। দুদকের উপসহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, “সংগৃহীত নথিপত্র ও প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। অনিয়মের মাত্রা ও দায়িত্ব নির্ধারণের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে”। তিনি আরও উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য সেবার মতো সংবেদনশীল খাতে এ ধরনের অনিয়ম জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযানে সহযোগিতা করার কথা স্বীকার করলেও অনিয়মের কারণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অভিযানের ফলাফল অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ প্রশাসনিক শাস্তির প্রস্তাব করা হতে পারে ।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালটি জেলার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হওয়ায় ওই অভিযান স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে দুদকের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা স্বাস্থ্য খাতের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ।
দুদকের ওই অভিযান স্বাস্থ্য সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সক্রিয় পদক্ষেপ। জনগণের আশা, অনিয়মের শিকড় উপড়ে ফেলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে সেবার মানোন্নয়ন ঘটবে।