চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও লালদিয়ার চর বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সরকারি উদ্যোগ বাতিলের দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। শনিবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া এ অনশন কর্মসূচি চলে দিনব্যাপী। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া স্কপ নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেনÑজাতীয় সম্পদ রক্ষার স্বার্থে এনসিটি ও লালদিয়ার চর বিদেশীদের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে আসতে হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ গত ১২ অক্টোবর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এনসিটি, লালদিয়ার চর এবং পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দিতে চুক্তি সম্পন্ন করা হবে। এর মধ্যে লালদিয়ার চর টার্মিনাল ৩০ বছরের জন্য এবং অন্য দুটি ২৫ বছরের জন্য ইজারা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে স্কপের কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত আধুনিক এনসিটিকে বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী পদক্ষেপ। আমরা কোনোভাবেই এ সিদ্ধান্ত মেনে নেব না।”
বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি তপন দত্ত বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে নেওয়া এই একতরফা সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে— যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই চক্রান্ত জনগণ মেনে নেবে না। সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে চট্টগ্রাম হরতাল-অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বন্দর অচল করে দেওয়া হবে।”
কর্মসূচির সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব জনগণের সম্পদ রক্ষা করা, বিক্রি বা ইজারা দেওয়া নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, জাতীয় সম্পদ বিক্রি নয়।” তিনি আরও বলেন, “বন্দর শ্রমিকদের হয়রানি ও অযৌক্তিক নোটিশের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
অনশন কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেনÑবাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস.কে. খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের নেতা খোরশেদুল আলম, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ.ম. জামাল উদ্দিন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মছিউদ্দৌলা, স্কপের যুগ্ম আহ্বায়ক রিজোয়ানুর রহমান খান, বিএলএফ মহানগর সভাপতি নুরুল আবসার তৌহিদ, জাহেদ উদ্দিন শাহিন, শানেওয়াজ চৌধুরী মিনু, ইফতেখার কামাল খান এবং টিইউসির কেন্দ্রীয় সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু।