৪০ বছর বয়সী তিন সন্তানের জননী এক সনাতনী গৃহবধূ নিজ গৃহে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের সময়কার ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে রেখেছে ধর্ষণে সহযোগিতাকারীরা। গত রোববার (১৬ মার্চ) রাত ৯ টার দিকে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রহিমাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষীতা সূত্রে জানা যায়, একই এলাকার রতন মিয়ার পুত্র রাকিব মিয়া (৩২) এলাকায় তারাবি নামাজ চলাকালে বৃষ্টির সময় অজিত চন্দ্র দেবনাথ এর বাড়িতে ঢুকে তার স্ত্রীকে একা ঘরে পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় উপস্থিত রাকিবের দুই সহযোগী ধর্ষণের ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে নেয়। রাকিব ও তার সহযোগীরা মহিলার কানে ও গলায় থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। চলে যাবার সময় এই বলে হুমকি দেয় যে, যদি এ কথা কাউকে জানায় তবে স্বামী-স্ত্রীকে এক সংগে জবাই করে হত্যা করা হবে। ধর্ষক একজন মাদক কারবারী ও সেবনকারী। সে একাধিক মাদক মামলার আসামী, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এবিষয় নিয়ে অভিযোগ করতে ধর্ষিতা নিজেই গতকাল সোমবার বিকেলে নরসিংদী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কলিমুল্লাহ-এর সংগে দেখা করে ঘটনার বর্ণনা দেন। ঘটনা শুনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

এব্যাপারে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি ইন্সপেক্টর তদন্তকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তারা গ্রেফতার হবে।

গদখালীতে কিশোরী গণধর্ষণের শিকার ছাত্রদলের দুই নেতাসহ চারজন আটক

মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা : ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রদলের দুই নেতাসহ চারজনকে আটক করেছে ঝিকরগাছা থানার পুলিশ। গত ১৬ মার্চ বিকেলে ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের পটুয়াপাড়া গ্রামের একটি লিচু বাগানে এ বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী কিশোরী ৯৯৯ নম্বরে কল করলে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলুর রহমান খান দ্রুত এক দল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করেন এবং মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সন্ধ্যায় চারজন আসামীকে আটক করেন।

আটককৃতরা হলেন, পটুয়াপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (২২), জাকির হোসেনের ছেলে জাবেদ হোসেন (২৮), শরিফুল ইসলামের ছেলে মামুন হোসেন বাপ্পি (২১) ও উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে আমিনুর রহমান (২০)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তরুণীটি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। কিন্তু অভিযুক্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত চারজনকে আটক করেন।

পুলিশ জানায়, মামুন হোসেন বাপ্পি গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এবং ইয়াসিন আরাফাত দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।

জানা গেছে, মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার এই মেয়েটি বেনাপোলের তার খালার বাড়ি থেকে বাসযোগে ফেরার পথে দুপুরে গদখালী বাজারে ফুল কিনতে নামে। এসময় ফুলের দোকানদার আমিনুর রহমানের দোকানে গেলে চার যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তারা তাকে ফুলবাগান দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে পটুয়াপাড়া গ্রামের জাবেদ হোসেনের লিচু বাগানে নিয়ে যায় এবং সেখানে গণধর্ষণ করে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী ও নাভারণ (সার্কেল) এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল কিন্তু যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।