ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে যদি এদেশের জণগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দেয় তাহলে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাই-বোনদের দখলকৃত সম্পত্তি তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বিগত ৫৪ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কেবল দখল করেছে। আর আমরা ক্ষমতায় গেলে সেসব দখলকৃত সম্পত্তি খুঁজে বের করে তা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিব। অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করেছে। কিন্তু আমরা তাদের মর্যাদা ও অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের ভাই বোনেরাও সমান সুযোগ সুবিধা ও সম্মান নিয়ে এদেশে বসবাস করবে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াত আয়োজিত ওয়ার্ড সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আসন্ন সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনর মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে চায়। তাদের চাওয়া যেন প্রতিফলিত হয় সে জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্ব প্রথম পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছে। যেন সকল ভোটারের ভোটের মূল্যায়ন হয়। কিন্তু একটি দল পিআর নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তবে আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্ত রয়েছি। ঘোষিত সময়ের মধ্যে বা তার আগে হলেও আমরা নির্বাচন করতে প্রস্তুত। কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আজ আপনারেদ একটাই লক্ষ্য, তা হলো অগামী সংসদ নির্বাচন। আপনাদের যার যা দায়িত্ব হবে, তা সঠিকভাবে পালন করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কোন প্রকার ভয়-ভীতি বা অপপ্রচারে কান দেয়া যাবে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন বলেন, যারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়, তারাই সংস্কার ও পিআর পদ্ধতি চায় না। কারণ তাদের কাছে ক্ষমতাই মূখ্য বিষয়, জনতা নয়। এদেশের হাজারো ছাত্র-জনতা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তা পূরণ করতে হলে অবশ্যই সংস্কার হতে হবে, জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি দিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং জুলাই সনদের ভিত্তিতেই এদেশে নির্বাচন হতে হবে।

তিনে আরো বলেন, আমরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছি। অতীতে জামায়াতে ইসলামী শুধু আসন বাড়ানোর চিন্তা নিয়ে নির্বাচন করেছিল। এবার শুধু মাত্র আসন বাানোর চিন্তা নয়, আগামী দিনে জনগণের সমর্থন নিয়ে ভোট বিজয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ৩শ’ আসনে বিজয়ের স্বপ্ন নিয়ে আমরা আমাদের এমপি প্রার্থী ঘোষণা করেছি। তবে আমরা একটা নির্বাচনী জোট করার পরিকল্পনা করছি, সেক্ষেত্রে হয়তো কিছু আসন তাদেরকে ছেড়ে দিতে হবে। এদেশের দেশপ্রেমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি বৃহত্তর নির্বাচনী জোট হবে ইনশাআল্লাহ্। এই জোট হবে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ এবং শক্তিশালী জোট এবং এই জোটই আগামী দিনে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে ইনশাআল্লাহ।

জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধানের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারী মোহাম্মদ আলমগীর এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, দিনাজপুর জেলা আমীর মাওলানা আনিছুর রহমান, ঠাকুরগাঁও জেলা সহকারি সেক্রেটারী অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।