খুলনায় পাইপ লাইনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহের দাবীতে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই খুলনা অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চনার শিকার। সরকার পরিবর্তন হয় কিন্তু খুলনার উন্নয়ন হয় না, খুলনার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। সকল অঞ্চলের সুষম উন্নয়ন করতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা আরও বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোন বৈষম্য আমরা চাই না। ভোলার উত্তোলিত গ্যাস অবশ্যই খুলনায় দিতে হবে। নেতৃবৃন্দ খুলনায় গ্যাস সরবরাহ না করলে আগামীতে রাজপথে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়ে বলেন, চির বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার খুলনাকে আর কত বঞ্চিত হতে হবে? আমরা খুলনার আপামর জনগণ সরকারের দিকে তাকিয়ে আছি ভোলার গ্যাস বরিশাল হয়ে ঢাকায় নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে অবিলম্বে খুলনায় আনার ব্যবস্থার উদ্যোগ নিবেন। নেতৃবৃন্দ খুলনায় অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নেওয়া হলে আগামীতে গণঅনশন এবং খুলনা অঞ্চলসহ আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার হুঁশিয়ারী দেন। ভোলা-বরিশাল-খুলনার পাইপ লাইনে গ্যাসের রুট পরিবর্তনের প্রতিবাদে এবং দ্রুত পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহের দাবিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) খুলনা জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে বেলা ১১টা থেকে দপুর ১২টা পর্যন্ত বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা এ হুঁশিয়ারী দেন। অবস্থান কর্মসূচীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী ও সংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অবস্থান কর্মসূচী শেষে উন্নয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান এর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব এডভোকেট শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা মহানগরী সভাপতি এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল, উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দা রেহেনা ঈসা, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব এডভোকেট নূরুল হাসান রুবা, বিএনপি নেতা সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, খুলনা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট খান মনিরুজ্জামান, খুলনার সংবাদপত্র পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক সময়ের খবর সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরীর সহ-সভাপতি মাওলানা শেখ মো. নাসির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির নেতা সিরাজ উদ্দিন সেন্টু, তোবারক হোসেন তপু, খুলনার নাগরিক সমাজের সভাপতি এডভোকেট বাবুল হাওলাদার, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খোকন, উন্নয়ন কমিটির নেতা মিজানুর রহমান বাবু, মোল্লা মারুফ রশিদ, মো. মনিরুজ্জামান রহিম, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক কবি সৈয়দ আলী হাকিম, খুলনা বিএল কলেজের সাবেক ভিপি এডভোকেট শেখ জাকিরুল ইসলাম, নতুন তারা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাইফুর রহমান মিনা, মো. নিজামউর রহমান লালু, অধ্যক্ষ জাফর ইমাম, ইঞ্জিনিয়ার মো. আজাদুল হক, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সেক্রেটারি মো. আব্দুস সালাম, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, সোনাডাঙ্গা থানা সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান নাঈম, মহানগরী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রাকিব হাসান, মো. মশিয়ার রহমান রমজান, এডভোকেট আওসাফুর রহমান, জিএম মঈন উদ্দিন, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসী’র সভাপতি ডাঃ মোঃ নাসির উদ্দিন, নাগরিক ফোরাম নেতা ইকবাল হাসান তুহিন, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসী’র সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু তাহের, কেডিএস এর সভাপতি আব্দুস সালাম শিমুল, উন্নয়ন কমিটির নেতা মিনা আজিজুর রহমান, অধ্যাপক মো. আবুল বাসার, মামুনুরা জাকির খুকুমনি, প্রফেসর সেলিনা বুলবুল, মো. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক মো. আযম খান, সরদার রবিউল ইসলাম রবি, সৈয়দ এনামুল হাসান ডায়মন্ড, মতলুবুর রহমান মিতুল, শেখ গোলাম সরোয়ার, ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল আলম সরদার, মো. শফিকুর রহমান, রকিব উদ্দিন ফারাজী, মিজানুর রহমান টিংকু, এডভোকেট এস এম মারুফ আহমেদ, আবু আল মিরাজ, মোরশেদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বাস জাফর আহমেদ, মো. হায়দার আলী, শিকদার আব্দুল খালেক, ঝর্না আক্তার বৃষ্টি, ড. সন্দীপক মল্লিক, ডা. ইকবাল হোসেন, সবুর মোড়ল, ইঞ্জিনিয়ার সেলিমুল আজাদ, মো. শফিকুল ইসলাম হোসেন, জারিন আলম, কাওছারি জাহান মঞ্জু, ইলিয়াস মোল্লা, নওশাদ উজ্জামান পল্টু, রেশমা আক্তার, সালমা জাহান মনি, শেখ আরিফ নেওয়াজ, মঞ্জুর হাসান অপু, এডভোকেট মেহেদী হাসান, সেলিম শিকদার, আব্দুস সালাম মোল্লা, মল্লিক জাহিদ হোসেন, আফরোজা খানম, নাজমুল তারেক তুষার, মিলন মন্ডল, প্রমিতি দফাদার।
বক্তারা আরো বলেন, খুলনার কোন কিছুই আন্দোলন ব্যতীত হয় নাই। আন্দোলন না করে সাধারণভাবে কখনো কিছু আমরা পাইনি। আরো কঠিন থেকে কঠিনতর আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। কারণ খুলনা শিল্পনগরী এখন মৃত নগরীতে পরিণত হয়েছে।
মিল, কল কারখানা সব বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা যদি সোচ্চার না হই বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে না তুলি, তাহলে কখনো আমরা পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ পাবো না। দলমত নির্বিশেষে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে খুলনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ বাস্তবায়ন
করতে হবে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের দুইটি নদী বন্দর আছে একটা চট্টগ্রাম আর একটা মোংলা। কিন্তু এই মোংলা বন্দরে ইনভেস্টমেন্ট না আসার কারণ অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা। বন্দরকে সচল করতে হলে প্রয়োজন একটি বিমানবন্দর।
এ সব দাবি আদায় করতে হলে খুলনার দুইটি প্রবেশ দ্বার বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ সামাজিক ও পেশাজীবী নেতারা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, যতদিন আমাদের এ সব দাবি বাস্তবায়ন না হয় ততদিন আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা খুলনার উন্নয়নে কোন বৈষম্য মেনে নেব না। প্রয়োজন বোধে খুলনার উন্নয়নের জন্য আমরা রক্ত ও জীবন দিতে প্রস্তুুত আছি।