গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা উড়ালসেতুর নিচে অস্থায়ী বাজারে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ইজারাদারদের সঙ্গে ভাসমান ব্যবসায়ী ও হকারদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাওনা উড়ালসেতুর নিচ ও আশপাশে ভাসমান হকাররা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি শ্রীপুর শিল্পাঞ্চল শ্রমিকদল থেকে বহিষ্কৃত নেতা কাজল ফকির ও পৌর যুবদল থেকে বহিষ্কৃত সেলিম নামের দুই ব্যক্তি নিজেদের নামে অস্থায়ী বাজারের টোল আদায়ের রশিদ বানিয়ে দৈনিক ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় শুরু করেন। নির্ধারিত কোনো চার্ট বা অনুমোদনপত্র না থাকায় এ নিয়ে হকারদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
হকাররা অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার তাঁরা এ বিষয়ে প্রতিবাদে সমাবেশ করেন। এর জের ধরে শুক্রবার বিকেলে শতাধিক যুবক দেশীয় অস্ত্রসহ বাজারে হানা দিয়ে ব্যবসায়ীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং যান চলাচল ব্যাহত হয়।
হকাররা জানান, “আমরা উড়ালসেতুর নিচে বহুদিন ধরে ব্যবসা করছি। কাজল ফকির ও সেলিম হঠাৎ করে নিজেদের নামে চাঁদা আদায় শুরু করলে আমরা তা মানি না। আজ তারা লাঠি, দা ও রড নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছেন।
অপরদিকে, ইজারাদার পক্ষের কাজল ফকির বলেন, “পহেলা বৈশাখ থেকে সরকারি অনুমোদন অনুযায়ী ইজারা আদায় করছি। শুক্রবার খাজনা তুলতে গেলে হকার সমিতির সভাপতি জাহিদের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
তিনি আরও জানান, “আহতদের মধ্যে শ্রীপুর শিল্পাঞ্চল শ্রমিক দলের নেতা নজরুল বেপারী, তেলিহাটি ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি আতিকুল ইসলাম বন্দুকসী এবং সদস্য ইমরানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে। এলাকায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে এবং কাজল ফকির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বাজারের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।