করোনা পরিস্থিতির সময় বাংলাদেশ রেলওয়ে করোনার অজুহাত দেখিয়ে ময়মনসিংহ-ভৈরব রেলপথে চলাচলকারী মেইল ট্রেন ঈশা খাঁ এক্সপ্রেস ও দুইটি লোকাল ট্রেন বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘদিন এসব ট্রেন বন্ধ থাকায় এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীরা খুবই বেকায়দায় পড়েছেন।

এছাড়া ট্রেনগুলো চালু থাকলে ইশ্বরগঞ্জ, নীলগঞ্জ, যশোদলপুর, বাজিতপুর নান্দাইল আঠারবাড়ী ঈশ্বরগঞ্জ সরারচর-হালিমপুর, কুলিয়ারচর ছয়সূতি ও গৌরীপুর, ভৈরবের কালিকাপ্রসাদসহ ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ২২টি রেলওয়ে স্টেশন আবারো প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে।

এসব ট্রেন ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ২২টি রেলওয়ে স্টেশনের যোগাযোগ রক্ষা করত। ফলে খুব সহজে সাধারণ মানুষজন স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াত করতে পারত।

রেলওয়ে সূত্রমতে, লোকাল ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া জনপ্রতি পাঁচ টাকা এবং মেইল ট্রেনে ১৫ টাকা। আর আন্ত:নগর ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া ৪৫ টাকা। ১১৬ কিলোমিটার দূরত্বের ময়মনসিংহ-ভৈরব রেলপথে লোকাল ট্রেনের জন্য নির্ধারিত ভাড়া ৪০ টাকা এবং মেইল ট্রেনের জন্য ৫৫ টাকা। বিপরীতে আন্তনগর ট্রেনে উঠলে একজন যাত্রীকে গুনতে হয় ১২৫ টাকা।

এই সকল রুটে কি কারনে ইশা খান এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেন গুলো সার্ভিস বন্ধ হল এ বিষয়ে একজন রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারের সাথে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন কি কারনে এ সকল ট্রেন সার্ভিস বন্ধ করা হলো এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন কারন আমাদের জানা নেই। এবং লিখিতভাবে আমাদেরকে এসব বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাননি। রেলের ঊর্ধ্বতন মহল এই ট্রেনগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন এটাই শুধুমাত্র আমরা জানি। এদিকে

কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, লোকাল ট্রেনগুলো প্রতিটি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করত। ফলে স্বল্প পরিসরে বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা যেত। ফলে ব্যবসায়ী ও পাইকারেরা দুধ, ডিম, কলা, মুরগি, ফল, শাকসবজিসহ বিভিন্ন কৃষিজ পণ্যের পাশাপাশি কাপড়, জুতা, কসমেটিকস, চাটাইসহ বিভিন্ন মনিহারি পণ্য আনা-নেওয়া করে বিভিন্ন বাজারে তা সরবরাহ করতেন। এই রটে চলাচলকারী ট্রেন গুলির বেশ কয়েকজন যাত্রী এই প্রতিনিধিকে জানান ভৈরব বাজার থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এই লোকাল ট্রেন গুলি চালু থাকলে আমাদের অনেক উপকার হতো।চিকিৎসা ক্ষেত্রে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমাদের এই অঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রোডের এই লোকাল ট্রেনগুলো চালু থাকলে অনায়াসেই ময়মনসিংহ শহরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নেওয়া সহ প্রয়োজনীয় সকল কাজকর্ম স্বল্প সময় স্বল্প খরচে সম্পন্ন করা যেত। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কি মনে করে করুনার অজুহাত দিয়ে এই ট্রেনগুলোকে বন্ধ করে দিলো এটা আমাদের বুঝে আসেনা। কেউ কেউ অভিযোগ তুলেছেন আশানুরূপ যাত্রী না পাওয়ায় এই রোডের ট্রেনগুলো বন্ধ করা হয়েছে। এবং বিনা টিকেটের যাত্রীর কারণে। প্রকৃতপক্ষে এই সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন ট্রেনে চলাচলকারী সচেতন যাত্রীগণ। এই রুটের হাজার হাজার যাত্রীগণ দাবি করেন অবিলম্বে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই তিনটি ট্রেন চালু করুক। এবং এই সকল স্টেশনের এলাকাবাসী যাত্রী সেবা হতে বঞ্চিত হতে চায়না।