আল-হেলাল, নালিতাবাড়ি, শেরপুর : শেরপুরের নালিতাবাড়িতে জ¦ালানি সাশ্রয়ীও পরিবেশ বান্ধব ও এক সময়ের জনপ্রিয় পানি সেচের কৃষিযন্ত্র ধুন (জাঁত) এখন আর চোখেই পড়েনা। অথচ ১৯৭১ স্বাধীনতার পরবর্তী কালেও এই কাঠের তৈরি যন্ত্রটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি শোভা পেতো। অত্যাধানিক সেচ মেশিনের সুইচ টিপলেই যেখানে গল গল কল কল করে পানি বেরিয়ে আসে-সেখানে কষ্ট করে কে আর গজারি গাছের ধুন দিয়ে ডুবা-বিল পুকুর, নদী থেকে পানি সিচবে। শুধু প্রান্তিক কৃষকরাই না, পানি সংকট মোকাবেলায় ধনী কৃষকরাও ধুন (জাঁত) দিয়ে খেতে পানি সেচ দিতেন। এতে শ্রমিক বেশি লাগলেও খরচ বাঁচতো বর্তমানের তুলনায় অনেক কম। ধুন কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। এর এক মুখবন্ধ আরেক মুখ খোলা থাকতো। একটি লম্বা গজারি এবং কুল গাছের কাঠের মাঝখানে গর্ত করে এক পাশে বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে দিতে হয়। শরীর ওজন দিয়ে ধুনের এক পাশে পানিতে ডুবিয়ে পানি ভরে উচুঁ করলেই পাথর, ইট কিংবা কাঠের গুরি দিয়ে বেঁধে রাখা অপর পাশ দিয়ে জমিতে পানি পড়ে। নালিতাবাড়ি উপজেলার ১০নং যোগানিয়া ইউনিয়নের উজানগাংপাড় গ্রামের মো. আব্দুল জব্বার (৫৭) তালুক পাড়া গ্রামের মো. আইয়ুব আলী (৫০) গেরামারা গ্রামের নাসির উদ্দিন (৬৬) এ প্রতিবেদকে জানান, এ ধুন যন্ত্রের সুবিধা হলো নদীর তীরে কিংবা পুকুর বিল ও ডোবার ধারে খুব সহজেই পানি উত্তোলন করা যায়। শক্তি লাগে কম।
কম খরচে বেশি পানি উত্তোলন করা যায়। এটি কাঁধে করে দু’জন মিলে সহজেই পরিবহন করা যায় এবং খরচও কম। এ বিষয়ে উপজেলার দক্ষিণ কোন্নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, শ্যালো মেশিন-মটর ও পাওয়ার পাম্প আসায় ধুন কাঠের যন্ত্রের জায়গা হয়েছে যাদু ঘরে। এখনকার ছেলে-মেয়েদের ধুন (জাঁত) দেখতে হলে যাদু ঘরে যেতে হবে।
তবে উপজেলায় অনেক পুরোনো কৃষকের বাড়িতে খোঁজ নিলে বেস কিছু ধুন (জাঁত) এর দেখা মিলেছে নিম্নাঞ্চলে।