বরেন্দ্রভূমি বলে খ্যাত রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার এক নিভৃত গ্রাম পানিহার। এই প্রত্যন্ত গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে বিখ্যাত পানিহার লাইব্রেরি। যাতে বইয়ের সংখ্যা ৭ সহ¯্রাধিক। এই গ্রামের শিক্ষানুরাগী এনায়েত উল্লাহ পন্ডিত তাঁর বাড়ির সামনে ২ শতক জমির উপর মাটির ঘর ও টিনের চালা নির্মিত দুটি ঘরে এই ঐতিহ্যবাহী লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে। জানা যায়, এনাতুল্লাহ ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। বইপ্রেমী মানুষ ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া এই প্রতিষ্ঠানের বইগুলো সংরক্ষণ পদ্ধতি অনুযায়ী যতœ করা হয় না বলে এতো বছরের পুরোনো সংগ্রহ অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। এখানে এমনও বই আছে, যেটা আর কোথাও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রথমে একটি মাটির তৈরি ঘরে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে একটি পাকা গৃহ নির্মিত হয়। কিন্তু বই রক্ষা করা যায় না যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে। রুমগুলো পাকা হলেও উই পোকার আক্রমণ হয়েছে। কীভাবে এতোগুলো বই সংরক্ষণ করা যাবে এনিয়ে ভাবনায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পানিহার লাইব্রেরিতে বিভিন্ন সাময়িকী, উপন্যাস, গল্প, সিনেমা, নাটক, অনুবাদ, ধর্ম-বিজ্ঞান, কবিতার বই, গল্পের বই, গোয়েন্দা উপন্যাস এবং উদ্ভিদ ও জীববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ৭ হাজার ৭০২টি বই রয়েছে। আছে কলকাতার রজনীকান্তের শনিবারের চিঠি, মাসিক মোহাম্মদী, মাহে নও, জয়তী, নতুন দিন প্রভৃতিসহ অনেক সাময়িকী। পাঠকদের জন্য আছে চারটি টেবিল ও ১৮-২০টি চেয়ার। এখন অল্প পাঠক আসে। তবে দুর্লভ বইয়ের টানে এখনো অনেক কবি-সাহিত্যিক ও গবেষকরা ছুটে আসেন এখানে। একজন শিক্ষাবিদ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘সবার আগে বইগুলো হেফাজতে নেয়া দরকার। এতো পুরোনো বই আর পাওয়া যাবে না। সেজন্য আর্কাইভ করা উচিৎ। স্ক্যান করেও বইগুলো সংরক্ষণ করা যায়।’ রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গণগন্থাগারের একজন কর্মকর্তা জানান, ‘পানিহার খুব সমৃদ্ধ ও অনেক পুরোনো লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরির নিবন্ধন নেই। নিবন্ধন থাকলে প্রতি বছর নভেম্বর মাসে সরকারি একটি অনুদান পেতো। তারা নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে।’