DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

৬ লেন মহাসড়কে সুবিধা বাড়লেও চালকদের কারণে দুর্ঘটনা রোধে হিমশিম খাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ

রাস্তার প্রসারতা বৃদ্ধি, নির্দিষ্ট পার্কিং জোন তৈরি, মহাসড়কের দুপাশে লোকাল গাড়ি চলাচলে প্রয়োজনীয় রাস্তা তৈরি, রেল পাড়াপার, হাট-বাজার, শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আন্ডারপাস নির্মাণসহ নানা ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর সিক্সলেন মহাসড়ক তৈরি হলেও পূর্বের হাল ছাড়েনি কয়েক শ্রেণির চালক।

বগুড়া অফিস
Printed Edition

আব্দুল ওয়াদুদ, বগুড়া অফিস : রাস্তার প্রসারতা বৃদ্ধি, নির্দিষ্ট পার্কিং জোন তৈরি, মহাসড়কের দুপাশে লোকাল গাড়ি চলাচলে প্রয়োজনীয় রাস্তা তৈরি, রেল পাড়াপার, হাট-বাজার, শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আন্ডারপাস নির্মাণসহ নানা ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর সিক্সলেন মহাসড়ক তৈরি হলেও পূর্বের হাল ছাড়েনি কয়েক শ্রেণির চালক। এছাড়াও দুইদিনের পথ কয়েক ঘণ্টায় যাওয়া, নিরবিচ্ছিন্ন চলাচলের ব্যবস্থা তৈরি হওয়াসহ নানা সুবিধা পেয়েও নিজেদের জেদ ও দাম্ভিকতা ছাড়তে পারেনি এই চালকরা। বিশেষ করে ট্যাংক-লরি ও মস্তবড়-বড় ট্রাকগুলোর চালক তাদের পুরোনো অভ্যাসেই রয়ে গেছে। অর্থাৎ নিজেদের সুবিধার জন্য বিন্দু পরিমাণ কষ্ট করা এবং ছাড় দিতে রাজি নয় তারা। এতে করে মহাসড়কে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। বিগত সময়ে স্বল্প প্রস্থের হাইওয়েতে দ্বীমুখী যান চলাচলে অনেকটাকই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল জনজীবন কিন্তু এখন ৪ গুন বেশি প্রস্থের ৪ লেন একমুখী মহাসড়ক তৈরি করেও সেই একই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দ্রুতগামী বাস, প্রাইভেট কার, মাইক্রোসহ নানাধরনের গাড়িগুলোকে।

নিয়মানুসারে বাংলাদেশে সাধারণত দ্রুতগামী গাড়িগুলো রাস্তার ডানদিক বরাবর চলে থাকে কিন্তু এই নিয়মকে কোনভাবেই তোয়াক্কা করে না মালবাহী ট্রাক ও ট্যাংক লরিগুলো। তারা ধীরগতিতে নিজের মতো করে রাস্তার ডানপাশ দিয়ে চলতে থাকে। আবার সম্পূর্ণ রাস্তা দখল করে দুটি ও তিনটি ট্রাক একযোগে যেতে লাগে দীর্ঘ সময়। এতে করে পেছনে থাকা দূরপাল¬ার গাড়িগুলোর সময় অনেক পিছিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে রিস্ক নিয়ে ওভারটেকিং করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এতে প্রাণহানির পাশাপাশি পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয় অসংখ্যা মানুষকে।

বগুড়া হাইওয়ে রিজিওনের দেয়া তথ্যানুযায়ী ২০২৪ সালে ৩০০টি সড়ক দুর্ঘনায় ২৬২ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এর মধ্যে ২১৭ জন পুরুষ, ৩৮ জন মহিলা ও শিশু রয়েছে সাত জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত ও গুরুতর জখম হয়েছে ২৭৫ জন। এর মধ্যে ২৩৬ জন পুরুষ ২৬ জন মহিলা ও শিশু রয়েছে ১৩ জন। এছাড়া চলতি বছরেও সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৫ জন।

এ বিষয়ে বগুড়া হাইওয়ে রিজিয়ন এর পুলিশ সুপার শহিদ উল¬াহ বলেন, মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে এই বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে বিভিন্নস্থানে আন্ডারপাসের নিচে তৈরিকৃত দোকানগুলো সরিয়ে দিয়েছি এবং যত্রতত্র পার্কিং রোধে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে বিশেষ করে ট্রাক ও ট্যাংক লরিগুলো চালক ও হেলপারেরা এসবের কিছুই শুনতে চায় না। তাদের আচার আচরণও খুবই খারাপ। বিভিন্ন সময় আমাদের অফিসারদের সাথেও চরম দুর্ব্যবহার করে থাকে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি তিনমাথা রেলগেট এলাকার আন্ডারপাসের উপরে কোন কারণ ছাড়াই দাহ্যপদার্থ অর্থাৎ তেলবাহী গাড়িগুলো তীব্র রোদের মধ্যে অবস্থান করছে। এতে করে দ্রুতগামী গাড়িগুলোর নানাধরনের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছালে তাদের সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করে। ওই ট্রাকগুলো হবিগঞ্জ থেকে দিনাজপুরে যাচ্ছিল। এমনকি গাড়ির কাগজপত্র দেখাতেও ছিল তাদের দাম্ভিকতা। এই কর্মকর্তা আরোও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সবাইকে এগিয়ে এসে একযোগে কাজ করতে হবে।