চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে, এটা শোনার পর তাদের আর ঘুম হচ্ছে না, অস্থির হয়ে গেছে তারা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ৩ ঘন্টা আগেও জানতো না হেলিকপ্টারে চড়ে এদেশ থেকে পালাতে হবে। আল্লাহ যখন এত বড় শক্তিশালী খুনিকে আমাদের দেশ থেকে পালানোর পর এদেশ স্বাধীন করেছেন, তখন আরেক ফ্যাসিস্ট আসবে, খুনি আসবে, টাকা পাচারকারী আসবে, আমাদের মনে হয় আল্লার রহমতে এটা হবে না। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে হবে, প্রয়োজনীয় সংস্কার হতে হবে, দৃশ্যমান খুনি জালেম টাকা পাচারকারীদের বিচার হতে হবে, তারপর নির্বাচন। এর বাইরে এদেশে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত গণসমাবেশে গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মানবতার পক্ষে কথা বলছে। খুনি, চাঁদাবাজদের, বিদেশে টাকা পাচারকারীদের সিঁড়ি হিসেবে কখনো ব্যবহার হয়নি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ হাসানুজ্জামান সজিবের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক স¤পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় ¯্রিেসডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। প্রধান অতিথি আরো বলেন, কিছু ব্যক্তি কিছু দলের কাছে এ দেশ এক প্রকার জিম্মি অবস্থায় ছিল। দেশ সুন্দর করার চেষ্টা থাকলেও তাদের কারণে সুন্দর করার পরিবেশ তৈরী হয়নি। ৫ আগস্টের পরে এখন একটি সুন্দর দেশ গঠন করার পরিবেশ তৈরী হয়েছে। এদেশ সুন্দর করার জন্য বিগত দিনে নিজের স্বার্থে দলের স্বার্থে দেশকে অগ্রাধীকার না দিয়ে যা করার তাই করেছে বাংলাদেশের সংবিধান। ওটা এক প্রকার ছেঁড়া ছোট একটি পুস্তিকা নিজের স্বার্থেই তৈরী করা হয়েছিল। যার যখন মন চেয়েছে তারা তখন ওইভাবেই সংবিধান পরিবর্তন করেছে। এখন সংবিধান যেনো ইচ্ছা করলেই নিজ এবং দলের স্বার্থে তৈরী করতে না পারে, সেকারণে এখন সুযোগ এসেছে নির্বাচন যে পদ্ধতি ছিল তার পরিবর্তন করা। সেই নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন হলো পিআর সিস্টেমে নির্বাচন। পিআর পদ্ধিতিতে নির্বাচন হলে ভোটারদের মূল্যায়ন হবে। আর বার বার চেষ্টা করেও ফ্যাসিস্ট চরিত্র একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে সংসদে যাওয়ার সুযোগ পাবে না। যারা এক সময় নিজের এবং দলের স্বার্থকে অগ্রাধীকার দিয়েছে দেশের স্বার্থ ভূলন্ঠিত করেছে তারা এই পিআর পদ্ধতি বোঝে না। তারা বলে পিআর পদ্ধতি খাই না মাথায় দেয় ? আমরা বলবো পিআর পদ্ধতি খাইও না মাথায়ও দেয়না। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে এ দেশ সুন্দর হবে মানবেতার কল্যাণ হবে মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন হবে। যারা পিআর পদ্ধতি বোঝেন না তাদের উদ্দেশে বলি, দলের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন। পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে হাজার হাজার ভাইকে মিথ্যা মামলায় দমন করা যাবে না। তাদের সংসার বিলিন করা যাবে না। যেখানে সেখানে রান্তায় নামলে খুন করা যাবে না। ৫৩ বছর স্বাধীন হয়েছে দেশ, ৫৪ বছর চলছে। যাদের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছিল যারা পরিচালনা করেছিল, তারা এক দুবার নয় ৫ বার তামাম দুনিয়ায় চোরের দিক থেকে ফাস্ট বানিয়েছিল। আর কত দিন এ অবস্থা চলবে? এ জন্য সর্বমহলের সর্বশ্রেণীর সাংবাদিক বন্ধুদেরকে প্রশাসনের ভাইদেরকে আওয়াজ তুলতে বলবো, এদেশ আমার, এদেশে জন্মগ্রহণ করেছি, এদেশে সুন্দর করার দায়িত্ব আমার রয়েছে, চাঁদাবাজদের জায়গা বাংলার জমিনে হবেনা। আমাদের দেশের টাকা বিদেশে পাচার করতে দেয়া যাবে না। কারন ব্যক্তি দলের চেয়ে দেশ বড়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে দেশের পক্ষে কথা বলে আসছে। মানবতার পক্ষে কথা বলছে এবং ইসলামের পক্ষে কথা বলছে। আপনারা আমাদের যতই রঙ লাগাতে চান, এখন কিন্তু অত সহজ নয়। এখন কালো কে সাদা বলে আর চালানো যায় না। এখন দিনকে রাত বানানো যায় না। সবাই জেনে গেছে আপনাদের চরিত্র। সবাই জেনে গেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চরিত্র।
গণসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমীর রুহুল আমিন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা সহকারী সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুস সামাদ ও সাধারণ স¤পাদক মাহবুবুর রহমান গওহরী, ওলামা পরিষদের সাধারণ স¤পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল কাসেমী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রধান যুগ্ম সমন্বয়কারী আমির হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মুফতি সোয়াইব হোসাইন কাসেমী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ আসলাম হোসেন এবং জাতীয় ওলামা মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ আলী। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে
জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের সহসভাপতি জহুরুল ইসলাম আজিজী ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ তুষার ইমরান। ইসলামিক শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখার সভাপতি নাজিম উদ্দিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি মীর শফিউল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখার সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন।