কর্ণফুলী নদীর পাড়ে বালুমহালের নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমকে (৫৫) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি ভাড়া করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন রাউজানের মো. মারুফ, মো. আবদুল্লাহ খোকন (ডাকনাম ল্যাংড়া খোকন), মো. সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমান। পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকালে নগর থেকে নিজ বাড়ি রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের হামিম অ্যাগ্রো ফার্মে যাওয়ার পর ফেরার পথে মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম পাশে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা সন্ত্রাসীরা হাকিমের প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলী চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। গাড়িচালকও গুলীবিদ্ধ হন। ঘটনার তদন্তে নেমে ৩১ অক্টোবর প্রথমে আবদুল্লাহ খোকনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর তার তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা থেকে মো. মারুফকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাকলাইন হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ; তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একনলা বন্দুক, এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। একই দিন গ্রেফতার করা হয় জিয়াউর রহমানকেও।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু জানান, “আবদুল হাকিম হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। বালুমহাল ও আধিপত্যের বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনির দুই দল এতে অংশ নেয়। এ ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ১০-১২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”

হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, “হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।” উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত রাউজান উপজেলায় ১৭ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ১২টি হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক বিরোধ থেকে সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র।