ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের ওয়াশপিটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনের বগিতে নাশকতার উদ্দেশ্যে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। গত ১৯ নভেম্বর ভোরে রেলওয়ে স্টেশনে আগুন দেয়ার এই ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা যায়, এসময় দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা হাবিলদার মাসুদ রানা, সিপাহি আসাদুজ্জামান এবং নায়েক ঈসমাইল আগুন টের পেয়ে নিজেদের শরীরে থাকা জ্যাকেট ওয়াশপিটের নিচে জমে থাকা পানিতে ভিজিয়ে তা দিয়ে আগুনের ওপর জাপটে ধরে আগুন নেভাতে সমর্থ হন।
এদিন আগুন নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগুন পার্শ্ববর্তী কোচ, ট্রেনের ইঞ্জিন এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের অন্যান্য অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে জানা যায়।
আগুন নেভানোর পর দেখা যায়, একটি বগির কয়েকটি সিটের বেশকিছু অংশ পুড়ে গেছে এবং অন্যান্য আরও কয়েকটি সিটে গান পাউডার জাতীয় মিশ্রণ ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। এগুলোতে পেট্রলজাতীয় তরল পদার্থ ঢালা হয়েছিল, যেন দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
স্টেশন সুপার আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, আরএনবি অর্থাৎ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর তাৎক্ষণিক সাহসী ভূমিকার ফলে সেই অপচেষ্টা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ময়মনসিংহ জংশন রেলস্টেশনের ট্রেন চলাচল এবং সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
আগুনের বিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের বাইরের অংশে জারিয়া লোকাল ট্রেনের কোচগুলো ধোয়ামোছা করার জন্য ওয়াশপিটে দাঁড় করানো ছিল। সেখানে এমনিতেই রাতে অনেক অন্ধকার থাকে। এই সুযোগে নাশকতার উদ্দেশ্যে ভোররাতে একদল দুর্বৃত্ত অপকৌশলে গানপাউডার এবং পেট্রল দিয়ে ট্রেনে আগুন দেয়। তিনি জানান, আগুন জ্বলতে শুরু করলে আরএনবির তিন সদস্য দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা এক দুর্বৃত্তকে ধাওয়া দেন। তবে অন্ধকার থাকায় তাকে ধরা সম্ভব হয়নি। পরে আরএনবি সদস্যরা নিজেদের পরিহিত জ্যাকেট খুলে তা পানিতে ভিজিয়ে আগুনের ওপর ঢেকে দেয় এবং দ্রুত পানি ছিটিয়ে আগুন নেভান। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রেলওয়ের জানমাল রক্ষা পায়।
এ ঘটনার পর থেকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।