খুলনায় দিনের বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ। অতর্কিত ও ঝটিকা এ সব মিছিল শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছে তারা। মিছিলে দলের শীর্ষ পর্যায়ের কোন নেতাকে দেখা না গেলেও কর্মীদের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। এদিকে একের পর এক মিছিলের ঘটনায় বিষ্মিত সাধারণ নাগরিকরা। পতনের মাত্র আট মাসের মাথায় তাদের এই প্রত্যাবর্তনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। তারা অবিলম্বে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐক্য ও মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানান। প্রশাসনের অভ্যন্তরে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীরা এখনও বসে আছে এবং এক্ষেত্রে কোন সংস্কার কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৭ টার দিকে নগরীর প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার আয়োজনে মিছিলের ব্যানারে ছিল শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান প্রফেসর ড. ইউনূসের বিষোদগার করা হয় সেখানে। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছেন মিছিলের স্থায়িত্বকাল ছিল কয়েক মিনিট। ভিডিওতে দেখা যায়, মিছিলকারীরা শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার’, ‘ শেখ হাসিনা ফিরবে আবার বীরের বেশে’ প্রভৃতি শ্লোগান দেন।
আওয়ামী লীগ যেখানে মিছিল করেছে তার খুব সন্নিকটে হরিণটানা থানা। থানার ওসি শেখ খাইরুল বাশার বলেন, উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শহরে এসে ঝটিকা মিছিল করে পালিয়ে যায়। সকালের দিকে হওয়ায় সে সময় রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা ছিল। ফুটেজ দেখে তাদেরকে ধরতে পুলিশের টিম মাঠে নেমেছেন।
এদিকে দুপুর আড়াইটার পর আড়ংঘাটা থানাধীন এলাকায় আবু নাসের মোড় থেকে আওয়ামী লীগের আর একটি মিছিল বের হয়ে দেয়ানার দিকে চলে গেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ব্যানার ছাড়াই অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন। প্রায় একই সময়ে নগরীর দৌলতপুর থানা এলাকায় আরও একটি মিছিল বের হয়। বিকেলে বয়রা বাজার থেকে আরও একটি মিছিল বের হয়। এই মিছিল থেকে আব্দুল ওয়ালিদ হাসান নিশান নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃত নিশান ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কর্মী বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশ তাকে ধরেনি। জনগণ তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এনসিপি’র প্রেস কনফারেন্স : বেলা সাড়ে ৩টায় খুলনা প্রেসক্লাবে প্রেস কনফারেন্স করে নগরীতে আওয়ামী লীগের একাধিক মিছিলের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। মাত্র ৮ মাসের মাথায় এভাবে প্রকাশ্যে বের হওয়ার জন্য তাার পুলিশ প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তাকে দায়ি করে বলেছে, সবক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সংস্কার সম্ভব হয়নি বলেই তারা এই দুঃসাহস দেখাচ্ছে।
কনফারেন্সে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এনসিপির সংগঠক আহম্মদ হামিম রাহাত ও ডা. আব্দুল্লাহ । এ সময় বিভিন্ন ক্যাম্পাসের ছাত্র সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।