খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের বরাতিয়া এলাকায় ২০ শতক জমিতে কৃষক নবদ্বীপ মল্লিক ড্রাগন ফল বাগানে ড্রিপসেচ পদ্ধতিতে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ড্রাগন ফল মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল যা বর্তমানে আমাদের দেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের বিভিন্ন জাত আনা হয়। ড্রাগন ফলের গাছ এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় গাছ। এই গাছের কোন পাতা নেই। ড্রাগন ফলের গাছ সাধারণত ১.৫ থেকে ২.৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিউট (বারি) কতৃক উদ্ভাবিত ড্রগন ফলের নতুন জাতটি হলো বারি ড্রাগন ফল-১ যা দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়াতে জনপ্রিয় ফল। এ ফলের আকার বড়, পাকলে খোসার রং লাল হয়ে যায় , শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির । ফলের বীজগুলো ছোট ছোট কালো ও নরম । একটি ফলের ওজন ১৫০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
উচ্চ ফলনশীল ও উচ্চ মূল্যের বিভিন্ন নতুন ফসল জাত, ধানের জাত, নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও বিপণণ, জৈব বালাইনাশক ও জৈব সারের সঠিক ব্যবহার সৃজন, উচ্চ মূল্যের ফল উৎপাদনে উদ্যোক্তা তৈরি, বসতবাড়িতে সবজি চাষ, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও তরমুজ চাষ, ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরি ও এর ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে সদস্যদের ধারণা প্রদান ও প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, খুলনা অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে, ক্ষেতে প্রয়োজনী সেচ দেওয়া কৃষকদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে । এক্ষেত্রে ড্রিপ সেচ পদ্ধতি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হিসেবে অত্র অঞ্চলের জন্য একটি উপযুক্ত প্রযুক্তি। এছাড়া ড্রাগন ফল যেহেতু উচ্চ মূল্যের ফল, সেহেতু এই ধরনের ফল বাগান গুলো ভালোভাবে যত্ন নিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। ড্রাগন ফলের কাটিং থেকে চারা রোপনের পর ১ থেকে ১.৫ বছর বয়সের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। ফল যখন সম্পূর্ণ লাল রঙ ধারণ করে তখন সংগ্রহ করতে হবে। গাছে ফুল ফোঁটার মাত্র ৩৫-৪০ দিনের মধ্যেই ফল খাওয়ার উপযুক্ত হয়।
এ ব্যাপারে কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ড্রিপ সেচ এর মাধ্যমে ৭০% পর্যন্ত পানি সাশ্রয় করা যায়, ৫০% পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করা যায়, শ্রমিক খরচ কম লাগে, সার পানির সাথে গুলে একসাথে গাছের গোড়ায় দেওয়া যায়, ফলে সারের অপচয় কম হয়, গাছের গ্রোথ ও ফলন ভালো হয় এবং ভূমিক্ষয় কম হয়। ড্রাগন ফল ক্যারোটিন সমৃদ্ধ থাকায় চোখ ভালো রাখে। আঁশের পরিমাণ বেশি থাকায় হজমে সহায়তা করে। এছাড়া আঁশ শরীরের চর্বি কমায়।