চট্টগ্রাম নগরীর প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ বিক্রির অভিযোগে তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো এই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রির চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক সায়েদ আলমের নেতৃত্বে একটি টিম মাঠ পরিদর্শন করে। তারা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এবং মাঠ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের সীমানার ভেতরে থাকা খেলার মাঠটির আয়তন প্রায় সাড়ে ১৫ কাঠা। সম্প্রতি এক পক্ষ ভূমি অফিসে ক্রয়সূত্রে নামজারির আবেদন করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। নথিপত্রে দেখা যায়, ২০০৬ সালে মাঠটি ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় বিক্রি দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি এই বিদ্যালয়ের মাঠ দখলে নিতে জাল নথি তৈরি করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
দুদকের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় খাস্তগীর স্কুলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে দুদক টিম। সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ কেনা-বেচার বিষয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। আমরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নথি যাচাই করেছি। পরবর্তীতে ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকেও তথ্য নেওয়া হবে।”
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক শাহেদা আক্তার বলেন, “মাঠটি বিদ্যালয়ের মালিকানায় এবং আমাদের ভোগ-দখলে রয়েছে। কে বা কারা এটিকে বিক্রি হয়েছে বলে নামজারির আবেদন করেছে তা অজ্ঞাত। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বিষয়টি জানেন।”
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে নারী শিক্ষার প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। অগ্নিযুগের বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারসহ দেশের বহু কৃতী নারী এ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন।