চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রত্যাশিত বে টার্মিনাল ২০৩০ সালের মধ্যেই অপারেশনে যাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মুনিরুজ্জামান । তিনি বলেন, এই টার্মিনাল চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানি খাতে নতুন এক যুগের সূচনা হবে। গতকাল সোমবার সকালে বন্দর অডিটোরিয়ামে “জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
রিয়ার অ্যাডমিরাল মুনিরুজ্জামান বলেন, বে টার্মিনাল শুধু চট্টগ্রাম নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে। এটি চালু হলে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়বে, জাহাজ আগমনের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে এবং দেশের অর্থনীতিতে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।
তিনি আরও জানান, বে টার্মিনাল প্রকল্পের নকশা ও প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সম্পন্ন করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ বলেন, বে টার্মিনাল প্রকল্প সময়ের দাবি। চট্টগ্রাম বন্দরের ক্রমবর্ধমান চাপ মোকাবিলায় এটি অপরিহার্য। প্রকল্পের আওতায় সাগরে ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল নির্মাণ, রেল ও সড়ক সংযোগ, কনটেইনার ইয়ার্ড, জেটি এবং আধুনিক সেবা অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও জানান, ‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। এটি নগরীর উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ আশা করছে, বে টার্মিনাল চালু হলে বছরে অন্তত ৩০ লাখ টিইইউ (Twenty-foot Equivalent Unit) কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ।
মতবিনিময় সভায় দেশি-বিদেশি সম্ভাব্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, বে টার্মিনাল সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক বাণিজ্যের অন্যতম লজিস্টিক হাবে পরিণত হবে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের শতবর্ষী ঐতিহ্য নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।