গাজীপুর মহানগর সংবাদাতা: গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত ক্যাপিটা টাইমস স্কয়ার মার্কেট–এ দোকান কিনে শতাধিক ক্রেতার প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মার্কেটটি প্লট নং-০৩ (পুরাতন ২৫০-২৫১), ব্লক-ডি, টঙ্গীতে অবস্থিত, যার উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে ক্যাপিটা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বনানী, ঢাকা-১২১৩-তে অবস্থিত।
২০০৫ সালের নভেম্বরে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তখন থেকেই কোম্পানি বাণিজ্যিক প্রচারণার মাধ্যমে দোকানের বুকিং নেয় ও ৩৬ কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের শর্তে দোকান বিক্রি করে। প্রতিটি ক্রেতাকে দোকান হস্তান্তরের নমুনা দলিলও সরবরাহ করা হয়।
তবে দুই-আড়াই বছর পার হলেও নির্মাণকাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ২০০৭ সালে কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০১০ পর্যন্ত করা হয়, কিন্তু ততদিনেও নির্মাণ কাজ ৩৫% শেষ হয়নি। ২০১২ সালে কোনো অগ্রগতি ছাড়াই অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ—শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ও টাইলস সংযোজন বাবদ স্কয়ার ফুট প্রতি ১,৬৫০ টাকা। অথচ ক্রয়চুক্তিতে এ ধরনের কোনো শর্ত ছিল না।
এরপর ২০১৩ থেকে বিভিন্ন সময়ে দোকান হস্তান্তর ও উদ্বোধনের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্রেতাদের আশ্বাস দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে জানানো হয়, ওই বছর দোকান হস্তান্তর না হলে ২০১৮ সাল থেকে প্রতিটি দোকানের জন্য মাসিক ৩,০০০ টাকা করে ভাড়া দেওয়া হবে। তবে তখনো নির্মাণ কাজ ৫০% অগ্রসর হয়নি।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে কিছু দোকান মালিককে নিয়ে প্রতীকী হস্তান্তরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। তখনো পুরো মার্কেট দৃশ্যমান বা প্রস্তুত ছিল না।
পরবর্তীতে ২৩ জুলাই ২০২২-এ বিদ্যুৎ সংযোগ বাবদ ১,২০,০০০ টাকা দাবি করে চিঠি দেওয়া হয়, যা ২০২৫ সালের এপ্রিলের পর বাড়িয়ে ১,৫০,০০০ টাকা করা হয়।
এছাড়া, সেবা চার্জের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম রয়েছে। নমুনা দলিলে মাসিক ৫ টাকা বর্গফুট নির্ধারণ করা হলেও ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে তা ৯ টাকা এবং ২০২৪ সালের ৩ জুলাই থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সময়মতো পরিশোধ না করলে ১০% সুদ আরোপের হুমকি দেওয়া হয়। অথচ এখনো ৩য় থেকে ৭ম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হয়নি।
সবশেষে, দোকান হস্তান্তরের সময় দেওয়া নমুনা দলিল একতরফাভাবে বাতিল করে নতুন দলিল গ্রহণে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, এ প্রতারণা ও জুলুম বন্ধ করে দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করা হোক। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাররম হোসেন খান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি!