মোঃ লাভলু শেখ, লালমনিরহাট : মাদক মামলায় জামিনে বেরিয়ে আবারও চোরাচালান। লালমনিরহাটে মাদকের কড়াল গ্রাসে যুবসমাজ ধংসের দিকে। মাদক মামলা বাড়লেও কমে নাই মাদক পাচার।

উত্তরের সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটে পাড়া-মহল্লায় হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদকদ্রব্যে এ মরণনেশা মাদকে ডুবে থাকছে জেলার উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নি¤œবিত্ত শ্রেণির হাজারো মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে ওঠতি বয়সী যুবসমাজ, স্কুল-কলেজের ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষ। এতে করে এ জেলায় মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকায় ওঠতি তরুণ ও যুবক ইয়াবাসেবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিভাবকমহল উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় আছেন। এদিকে দফায় দফায় অভিযান ও অসংখ্য মামলার পরও লালমনিরহাটের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামগুলোতে কোনভাবেই থামছে না মাদকের বিস্তার। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের পরও মাদক ব্যবসায়ীরা রীতিমতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা যায়। একটি ইউনিয়নেই প্রায় ৫০/৬০ জন বড় মাদক ব্যবসায়ী সক্রিয়। যাদের মধ্যে অনেক জনপ্রতিনিধিও রয়েছে। একেকজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৪ থেকে ১৫টি পর্যন্ত মামলা। সীমান্তবাসী সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটে প্রায় ২৪৮ কিলোমিটার ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। ওই সীমান্ত গুলোতে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন করছে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি, রংপুর ৫১ বিজিবি ও রংপুর ৬১ বিজিবি তিস্তা-টু এর বিজিবি সদস্যরা। সীমান্তের ওই ৩টি সেক্টরের অধীনে থাকা কমপক্ষে অর্ধশত স্পট দিয়ে দেদারছে আসছে ফেনসিডিল, গাঁজা, মদ ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক।

সীমান্ত গ্রামের মফিজুল ইসলাম,বলেন, প্রতিদিন সীমান্তে বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারসহ নানা যানবাহনে চড়ে সুকৌশলে তরুণ, যুবক, কিশোর, যুবতীরা ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা, মদ, সেবন করতে ছুটে আসে।

সীমান্ত এলাকার মশিউর রহমান বলেন, এলাকায় মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে।

প্রতিদিন সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ফেনসিডিল, হেরোইন ও গাঁজা দেশের অভ্যন্তরে ঢুকছে। ভারত থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ে এসে প্রথমে সীমান্তের গ্রামগুলোতে জড়ো করা হয়। পরে সুযোগ বুঝে সেগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আবার সুযোগ বুঝে সেগুলো বিভিন্ন যানবাহনে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। মাঝে মধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ছোট- বড় চালানসহ বহনকারীদের আটক করতে সক্ষম হলেও বড় বড় চালানসহ মূল হোতারা এখনো ধরাছায়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে । এ কারনে মাদক নিমূল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে ।স্থানীয় সচেতনমহল মনে করেন, যুবসমাজকে বাঁচাতে হলে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় যুব সমাজ ধ্বংসসহ চুরি ছিনতাই,খুন অপরাধ প্রবনতা মারাত্বকভাবে বেড়ে যাবে। আর এ জন্য পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবিকে আরো সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে এবং অভিয়ান পরিচালনা করে মাদক ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার করে কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে।