শিবালয় (মানিকগঞ্জ)সংবাদদাতাঃ মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার গাবতলী খালের উপর সেতু নির্মাণ কাজ চার বছরেও শেষ হয় নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রাক্কলিত ব্যয়ের প্রায় ৮০ ভাগ টাকা তুলে নিলেও সেতু নির্মাণের আসল কাজ বাকি রয়ে গেছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ না হওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা। এতে কয়েকটি ইউনিয়নের হাজারোও মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল (এলজিইডি) অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ-এলজিইডি গাবতলী খালে ৭২ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের জন্য ২০২১ সালে কার্যাদেশ দেয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহানা এন্টারপ্রাইজ ও জান্নাত কনট্রাকশন যৌথ ভাবে ওই বছরের ৫ মে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। ৫ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যায় সাপেক্ষে এ সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর শেষ করার কথা।জানা যায়, সেতু নির্মাণ স্থলে প্রায় দুই বছর আগে ৪টি পিলার নির্মাণ করা হয়। ধীর গতিতে সেতু নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় নির্দিষ্ট সময় পার হয়েছে। এ মধ্যে ৫ আগষ্ট আন্দোলনের আগে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে সাত কিস্তিতে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার ৩শ’ টাকার বিল তুলে নেয়। জুলাই আন্দোলনের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারীরা গা ঢাকা দেয়। গত নয় মাসে এ সেতু নির্মাণ কাজের তেমন কোন অগ্রগতি নেই। তবে, মাঝে মধ্যে ঠিকাদারের ৩/৪ জন লোক এসে খোঁজ-খবর নিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানায়। ফলে, সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়ায় সর্বস্থরের লোকজন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. রতন জানান, তিনি ছোট থেকেই তার বাপ-দাদার মুখে শুনে আসছে এখানে একটি ব্রিজ হবে। ৪ বছর আগে ব্রিজের কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি ব্রিজটি। চরাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে এ রাস্তা দিয়ে। এ সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না করায় স্কুল-কলেজ পুড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব ধরনের লোকজন দারুণ ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
অপর বাসিন্দা আহেদ আলী জানান, ৪ বছর ধরে চলমান কাজ মাঝে মাঝে ৩/৪ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হলেও কিছু দিন পর আর কাউকে পাওয়া যায় না। দীর্ঘ দিন ধরেই এভাবে চলে আসছে ব্রীজের কাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু নজরদারি বাড়ালেই এ ব্রিজের কাজ শেষ হবে বলে মনে করেন তিনি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, বিষয়টি জেনে সেতুটি পরিদর্শন করে এলডিইডি প্রকৌশলীকে দ্রুত কাজ শেষ করা তাগিদ দেয়া হয়েছে। আট মাসের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে। ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন বিল না দেয়ার জন্য সংশিষ্ট কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।