পাবনা সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, সত্যের পক্ষে দৃঢ় নৈতিকতার সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী পড়ালেখা করলে তবেই জীবনের সফলতা আসবে। তিনি গতকাল রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শহীদ আব্দুস সাত্তার মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবির সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ শাখা কর্তৃক আয়োজিত নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে একথা বলেন। ইসলামী ছাত্র শিবিরের উদ্যোগে প্রায় ১২ শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রোগ্রামের শুরুতে শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও গিফট বক্স প্রদান করা হয়।
কলেজ শাখার সভাপতি আরিফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মামুন আল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও পাবনা ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ ইকবাল হুসাইন, চাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি ইব্রাহিম রনি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূইয়া, চেকপার্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নাঈম হোসেন, পাবনা শহর শাখার সভাপতি গোলাম রহমান প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সাবেক সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল লতিফ, অধ্যাপক রাকিব উদ্দিন, জুলাই শহীদ জাহিদুল ইসলামের পিতা দুলাল উদ্দিন মাস্টার মাহবুব নিলয়ের পিতা নুরুল ইসলাম বলেন, তোমরা যারা নতুনভাবে উচ্চশিক্ষার দোরগোড়ায় প্রবেশ করলে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য, আজ থেকেই পরিকল্পনা শুরু করো। বই পড়ো, দক্ষতা বাড়াও, সত্যের পক্ষে দৃঢ় থাকো এবং নৈতিকতার সঙ্গে এগিয়ে চলো। কারণ শিক্ষাই মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে, আর নৈতিকতা তাকে মহৎ করে।
তিনি আরো বলেন, আমি আশা করি এডওয়ার্ড কলেজের নবীন শিক্ষার্থীরা আপন প্রতিভা ও পরিশ্রম দিয়ে নিজেদের মতো করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে। ছাত্রশিবির সবসময়ই শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নে পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, জুলাই আন্দোলন এবং এর আগে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। ক্যাম্পাসগুলোয় গুন-খুন, হামলা ও নির্যাতনের কারণে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা তাদের পরিচয় দিতে পারতো না। ক্যাম্পাসগুলোয় নামাজ পড়ায় শিবির সন্দেহে রাতভর নির্যাতন করা হতো। পাখি হত্যা করলে যেখানে বিচার হতো, সেখানে শিবির মারলে বিচার হতো না। খুনি হাসিনার পতনের মাধ্যমে এখন এসব জায়গায় সে নির্যাতন থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তি পেয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আজ বাংলাদেশের অভিভাবকরা চলমান পরিস্থিতির কারণে ছাত্রশিবিরকে একটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে চিন্তা করেন। তবে আমাদের মূল কাজের মাত্র ৫ থেকে ১০ ভাগ গতানুগতিক রাজনীতির সাথে মিলে। বাকি সময়টা একজন ছাত্র, সুনাগরিক এবং ধার্মিক হিসেবে যা করা দরকার সেটি আমরা করি। আজ আমরা শিবিরের সকল সৌন্দর্য তাদের কাছে তুলে ধরতে সফল হয়েছি। অভিভাবকদের কাছে শিবিরকে সম্পূর্ণভাবে তুলে ধরতে পেরেছি যার কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিজ দায়িত্বে ছাত্রশিবির করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন।
পূর্ব রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে পবিত্র আল-কোরআন, ফুল, ইসলামী বইসহ নানা উপহার সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বরণ করে ছাত্রশিবির।