গাজীপুরে শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় আবারও উত্তাল মহাসড়ক

গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় এক নারী শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বুধবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন, যা চার ঘণ্টা স্থায়ী হয়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও মালিকপক্ষের আশ্বাসের পর দুপুর ১২টায় তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

শ্রমিকরা জানান, তাদের সহকর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস তামান্না (৩২) অসুস্থ সন্তানের জন্য মঙ্গলবার রাত ৯টায় ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু এপিএম মতিউর রহমান ছুটি না দিয়ে তার পরিচয়পত্র রেখে দেন এবং তাকে কারখানা থেকে বের করে দেন। বাধ্য হয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। বুধবার সকালে কাজে ফেরার পথে ৫টা ৪০ মিনিটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।

তামান্নার মৃত্যুতে শ্রমিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যখন কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করে যে তামান্না তাদের শ্রমিক ছিলেন না। এতে আন্দোলনকারীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। শুধু সহকর্মীর স্বীকৃতি নয়, আন্দোলনরত শ্রমিকরা বেশ কিছু ন্যায্য দাবিও উত্থাপন করেন।তাদের দাবী গুলোর মধ্যে রয়েছে কারখানার ডিউটি টাইম সকাল ৬টার পরিবর্তে ৭টা করা। বিকেল ৫টার মধ্যে ছুটি নিশ্চিত করা।

ইফতারের পর অতিরিক্ত ডিউটি বাতিল করা। ঈদের ছুটি ১০ দিন করা। চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে ঈদ বোনাস পরিশোধ করা। পর্যাপ্ত সংখ্যক ফেস পাঞ্চ মেশিন স্থাপন করা। গাজীপুর শিল্প পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের দাবিগুলো নিয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। এরপর শ্রমিকরা আশ্বাস পেয়ে বেলা ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে, একই দিন সকালে কালিয়াকৈরের গ্লোবাস কারখানার শ্রমিকরা মৌচাক এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বর্তমানে বাঘের বাজার ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি যদি পূরণ না হয়, তবে তারা আবারও কঠোর কর্মসূচি দিতে পারেন।