জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় লেয়ার পোল্ট্রি শিল্পে নেমে এসেছে চরম সংকট। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও ডিমের ধারাবাহিক মূল্যহ্রাসের কারণে খামারিরা টানা লোকসানে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে অনেকেই খামার বন্ধ করে বিকল্প পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

বর্তমানে ৫০ কেজি লেয়ার মুরগির খাদ্যের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭০০ টাকা। অন্যদিকে বাজারে প্রতি পিস ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ৮ টাকা ৫০ পয়সায়। এতে প্রতি ডিমে খামারিদের লোকসান হচ্ছে ১ থেকে ১.৫ টাকা। ফলে দীর্ঘদিনের কষ্টার্জিত বিনিয়োগ ও পরিশ্রম ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

ডিমের বাজার ধস নামায় অনেক খামারি একসঙ্গে রিজেক্ট (বাতিল) মুরগি বিক্রি করছেন। বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় রিজেক্ট মুরগির দামও কমে গেছে। হিসাব অনুযায়ী, এক হাজার লেয়ার ধারণক্ষমতার একটি ফার্মে ডিম উৎপাদন শুরু হওয়া পর্যন্ত খাদ্য, বাচ্চা ও অন্যান্য উপকরণ মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ৮–৯ লাখ টাকা। কিন্তু এখন উৎপাদন শেষে রিজেক্ট মুরগি বিক্রি করে খামারিরা পাচ্ছেন মাত্র চার লাখ টাকা—যা মূলধনের প্রায় অর্ধেক লোকসান।

কাছিমা গ্রামের সফল উদ্যোক্তা ও তিন হাজার লেয়ার ফার্মের মালিক মমতা বেগম বলেন, এইভাবে লস দিয়ে আর ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। রিজেক্ট মুরগি বিক্রি করে অন্য ব্যবসায় যাওয়ার চিন্তা করছি।

বোয়ালমারী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও জুনাইন সাইয়ারা পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী আজিজুর রহমান (বিএসসি) জানান, ব্যাংক লোন নিয়ে ফার্ম করেছি। কিন্তু এখন কিস্তি শোধ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

ডিম ব্যবসায়ী সাক্কু মিয়া বলেন, শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেশি হওয়ায় রমজান পর্যন্ত ডিমের দাম আরও কমতে পারে।

কাজী ফার্মের ডিলার সোহেল মিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এভাবে খামারগুলো বন্ধ হতে থাকলে আগামী বছরের জুন থেকে ডিমের দাম হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। তখন দেশে ডিম সংকট দেখা দেওয়ারও আশঙ্কা আছে।

ইসলামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল আলিম জানান,

ডিমের মূল্যহ্রাস ও খামারিদের সংকট বিষয়ে অধিদপ্তর অবগত আছে। সরকার খাদ্যের দাম কমাতে কাজ করছে। এতে লোকসান কিছুটা কমবে।