আল-হেলাল, নালিতাবাড়ি শেরপুর : প্রকৃতিতে এখন ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ শেষে হেমন্ত নামছে। এরপর শীতকাল। কিন্তু এখনই প্রকৃতি যেন জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের উপর ভোরের সূর্যের আলো হালকা লালচে রঙের ঝিলিক দেখা গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঘাসের মাথায় যেন মুক্তোর মতো শিশির কণা জমে আছে। সারাদিনের তীব্র গরম শেষে গভীর রাত থেকে শুরু হচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া, সঙ্গে নামছে হালকা কুয়াশা। শীতকে ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে গ্রাম হচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের পিঠাপুলির দোকানগুলো। গারো পাহাড়ের মানুষ বলছেন, এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত ভর টিনের চালে হালকা বৃষ্টির মতো টিপ টিশ শব্দে বাড়তে থাকে কুয়াশা। বিশেষ করে গাছ গাছালি ও ধানের শীষে জমতে দেখা যায় শিশির বিন্দু। গ্রামগুলোতে দেখা গেছে, পুরনো কাঁথা নতুন করে সেলাই করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামীণ অঞ্চলের নারীরা। আবার অনেকে বাড়ির উঠানে বা গাছের নিচে বসে রঙ-বেরঙের সুতো দিয়ে তৈরি করছেন নতুন কাঁথা। উপশহর এলাকায় হাটতে বের হওয়া হাজী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল একজন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হই। তবে এ বছরের চারদিকের সাদা কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে শীতের দিন চলে এসেছে। অথচ অর্ধেক রাত পর্যন্ত ঘরে ফ্যান চলতে হয়েছে। উ”চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মৌলভি শিক্ষক মাওলানা আফছার উদ্দিন দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, ঘাসের উপর শিশির কনা বৌদ্রে আমাদের এলাকায় শীতের আগমন ঘটে গেছে। শীত এলাকার মানুষের জন্য কষ্টের সঙ্গে আনন্দের। গ্রামের হাট বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। বাজারে চোখে পড়ার মতো ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, ওলকপি, গাজর, টমেটো, শিমসহ ধনিয়া পাতার মতো শাকসবজি। অনেক কৃষক ব্যস্ত শীতের সবজি চাষে। সবজি চাষি মোঃ সিরাজ আলী বলেন, অন্য সময়ের তুলনায় ঠান্ডা আগে পড়ায় ফসলে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপায় না পেয়ে ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। তাতে উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ি উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ মশিউর রহমান দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কৃষকদের সব সময় কারিগরি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের সহায়তায় উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সর্বো”চ সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হবে। এদিকে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। তিন হাজার দুইশত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে এক কেজি করে সরিষার বীজ ও এক কেজি ডিএফটি ও এমগুনি সার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুইশত জনকে ২০ কেজি করে গমের বীজ, ০১ কেজি করে পেঁয়াজের বীজ, ১০ জনকে ০৫ কেজি করে মশুরের বীজ দেওয়া হয়।