ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থান ২০২৪ শুধু রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক ছিল না-চট্টগ্রামও ছিল এই গণজাগরণ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি প্রধান দুর্গ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ও বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিকুল আলম। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আয়োজিত ‘জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে’ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ুচট্টগ্রামের মাটি থেকেই ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল। এই জনপদের মানুষ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের দখলদারিত্ব, দলীয়করণ ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রক্ত দিয়েছে। বর্তমান সরকার সেই স্মৃতি ধরে রাখতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে শহীদ স্মৃতি ফলক, ‘জুলাই যাদুঘর’ নির্মাণ এবং শহীদ পরিবার পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।”

বক্তারা বলেন, ‘২০২৪ জুলাই অভ্যুত্থান ছিল একটি অভ্যন্তরীণ গণজাগরণ, যা দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের ইতিহাস। কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতা, সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক কর্মী-সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ এই আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিলেন।” তারা আরও বলেন, “এই একচেটিয়া সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে হলে জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।”

শহীদ ওমর ফারুকের স্ত্রী সীমা আক্তার বলেন, “আমার স্বামী এই রাষ্ট্রকে শোষণমুক্ত করতে রক্ত দিয়েছেন। অথচ আজও আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যারা ক্ষমতায় আছে, তাদের উচিত শহীদ পরিবার পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা।”

শহীদ শান্তর মা কোহিনূর আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলে শান্ত চেয়েছিল স্বৈরাচারের পতন। আজও তার হত্যার বিচার শুরু হয়নি। এটি এই রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। আমি সরকারের কাছে কোনো সহানুভূতি চাই না, চাই কেবল বিচার।” অনুষ্ঠানে ‘জুলাই যোদ্ধা’দেরকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সূত্রে জানা গেছে, ‘জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে’ সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচিতে থাকবে স্মৃতিচারণ, গবেষণা-ভিত্তিক আলোচনা সভা, চিত্রপ্রদর্শনী, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং শহীদদের নিয়ে কবিতা-পাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।