এম এ আর মশিউর, যশোর : দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম প্রধান সরকারি হাসপাতাল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতাল। দীর্ঘদিন ধরেই এ হাসপাতালটি মেশিন ও চিকিৎসা যন্ত্রপাতির সংকটে ভুগছে। অধিকাংশ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি অচল ও সংকট থাকার কারনে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সাধারণ রোগীদের অনেককেই বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে, যা আর্থিকভাবে তাদের চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, অকেজো মেশিন ও যন্ত্রপাতির মধ্যে অনেকগুলোই মেরামতযোগ্য। কিন্তু অর্থাভাবে তা হয়ে উঠছে না। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীদের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। এতে পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকরা। আর বাড়তি পয়সা খরচের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। যাদের সঙ্গতি আছে, তাদের জন্য অবশ্য এটা কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু যাদের সঙ্গতি নেই তারা পড়ছেন বিপাকে।
একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মেশিনের মধ্যে অন্যতম স্যাকার। জেনারেল হাসপাতালে স্যাকার মেশিনের সংখ্যা ৫২ টি। কিন্তু এর মধ্যে ১৫টি সচল, বাকিগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অকেজো ৩৭টির মধ্যে অধিকাংশই মেরামতযোগ্য। কিন্তু অর্থাভাবে তা মেরামত করা যাচ্ছে না। ৭টি এক্সরে মেশিনের মধ্যে ৩টিই অচল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। যে দুটি মেশিন সচল আছে, তা দিয়ে নাম মাত্র কিছু এক্সরে করা যায়। কার্যত জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের প্রায় সবাইকেই বাইরে থেকে এক্সরে করিয়ে আনতে হয়। অবিলম্বে এই হাসপাতালে এক্সরে মেশিন সরবরাহ করা দরকার বলে অভিমত চিকিৎসকদের।
২৫০ বেড হাসপাতালে থাকা ৭টি মাইক্রোস্কোপের মধ্যে মাত্র ২টি সচল। এ দুটি মেশিন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। এয়ারকুলার ৯৫ টির মধ্যে ৬৫টি অচল। বাকি ৩০ টি অচল এয়ারকুলার মেরামত করার কোনো উদ্যোগ নেই। ৫টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে ৩টি সচল থাকলেও বাকি দুটি অচল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। এসব এয়ারকুলার ও অ্যাম্বুলেন্স মেরামতযোগ্য হলেও দীর্ঘদিনেও তা করা হয়নি। এছাড়া ২টি ডেন্টাল চেয়ার, মাইক্রোমেগা ইন্সট্রুমেন্ট, স্টান্ডারড, অমল প্যাক, ডেন্টাল কট্রিজেশান মেশিন অচল হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতালে এসব মেশিনের একটিও ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় নেই।