সিলেট জেলায় অবৈধভাবে পাহাড় ও টিলা কাটার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। পরিবেশ রক্ষায় কঠোর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারওয়ার আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

অফিস আদেশে বলা হয়, সম্প্রতি সিলেট জেলায় পাহাড় ও টিলা কাটার প্রবণতা বেড়েছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি এ কাজে জড়িয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এসব কারণেই পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুসারে জেলায় পাহাড় ও টিলা কাটার ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। জেলা প্রশাসন আরও জানিয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ১৫ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিøষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ আদেশটি সরকারি আদেশ হিসেবে গণ্য হবে বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওসমানী হাসপাতালে দুদকের অভিযান: সিলেটের সবচেয়ে বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন দুদক সিলেট সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, প্যাথলজি বিভাগ, রোগীদের জন্য বরাদ্দ খাবার ও ওয়াশরুম ঘুরে দেখেন তারা। পাশাপাশি, বিভিন্ন দাফতরিক নথিপত্রও তলব করে খতিয়ে দেখা হয়।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে। এর মধ্যে বিভাগীয় এই হাসপাতালজুড়ে অপরিচ্ছন্নতা, আউটসোর্সিংয়ে অনিয়ম, হাসপাতালের ওষুধ বাইরে বিক্রি করা, রোগীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ না দেওয়া, রোগীদের নির্ধারিত খাবার মেন্যুর চেয়ে কম দেওয়া, ২৬২ জন কর্মচারীর বেতন তিন মাস ধরে আটকে রাখা, অ্যাম্বুলেন্সে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ দেখিয়ে প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে মাসে বাড়তি ১,৮০০ টাকা নেওয়া। দুদকের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানে পাওয়া এসব অভিযোগের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ নগরবাসী

এই গরমের মধ্যেও সিলেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ নগরবাসী। এ অবস্থায় তীব্র গরমে নগরজুড়ে হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এক দিকে তীব্র গরম অন্যদিকে বিদ্যুৎ সংকট, যা নগরবাসীকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ সংকটের কারণকেই উল্লেখ করছেন কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ সংকটের কারণে দিনে-রাতে একাধিকবার লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে সংকট কিছুটা কমতে পারে। পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে বিদ্যুতের চাহিদা এখন ৪০ মেগাওয়াটেরও বেশি। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ মিলছে মাত্র ২৫ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট। ফলে প্রতিদিনই ঘনঘন লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন অফিস-আদালত ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মজীবীরা। বিশেষ করে দুপুর বেলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অফিস-আদালতে কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। এতে হাজার হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এসব ব্যবসায়ী। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে বিপাকে রয়েছেন শিশু, শিক্ষার্থী ও গৃহিণীরাও। রাতের বেলা এবং ভোরের দিকে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুমের ব্যাঘাতের পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা।

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে কী কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে তা বলা সম্ভব নয়। তবে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম হচ্ছে। ফলে নগরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সররাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি কতদিন থাকবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না। জাতীয় গ্রিড থেকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ হলে এ সংকট কমে যাবে।’