আন্তর্জাতিক টেন্ডারের প্রক্রিয়া চলমান উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানিয়েছেন, এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ এনসিটি, লালদিয়া ও বে টার্মিনালে অন্তত প্রথম অপারেটর নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর ফটকে এজেন্ট ডেস্ক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। এ সময় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আরএসজিটির অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সুখকর ছিল না। আন্তর্জাতিক অপারেটরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেক ধাপে কাজ আটকে গেছে এবং বেশ কিছু টেকনিক্যাল সমস্যায় তারা ভুগছেন। ফলে প্রত্যাশিত কনটেইনার হ্যান্ডলিং ভলিয়ুম পাওয়া যায়নি। তবে সিডিডিএল ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে—তাদের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম মাসেই এনসিটিতে হ্যান্ডলিং ভলিয়ুম বেড়েছে ৩০ শতাংশ এবং টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম কমেছে ১৩ শতাংশ। তিনি জানান, রিপোর্ট অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের সর্বোচ্চ সক্ষমতা ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন টিইইউস হলেও গত বছর সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন। প্রযুক্তি, বেস্ট প্র্যাকটিস এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এই সক্ষমতা আরও বাড়ানো সম্ভব। সেরা মডেল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাঁচ বছরের প্রকল্প শেষ হতে প্রায়ই ১৫ বছর লেগে যাওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এতে গ্লোবাল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ে। ডিসেম্বরের মধ্যে বড় বন্দরের প্রকল্পগুলোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, চুক্তি স্বাক্ষর ও গ্রাউন্ড ব্রেকিং কার্যক্রম শুরু করতে চান তারা, যাতে নির্বাচন-পরবর্তী সময়েও কাজ অব্যাহত থাকে। চৌধুরী আশিক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের শিল্পায়ন, রপ্তানি ও সাপ্লাই চেইনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বেপজা, বেজা ও হাইটেক পার্কের উন্নয়নে এ বন্দরের সক্ষমতা ১৫০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। তিনি জানান, অটোমেশন চালু হওয়ায় সময়, দুর্নীতি ও হয়রানি কমবে এবং করাপশন ইনডেক্সে উন্নতি আসবে। ইতিমধ্যে ফাইভজি এমওইউ স্বাক্ষর হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিও যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের বন্দরগুলোর সক্ষমতা চার থেকে পাঁচগুণ বাড়ানো সম্ভব।