বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফ এ দেশের তাওহিদি জনতার অগ্রসেনানী। আলিফরাই এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী। আলিফের মতো সাহসী যুবকরা যতদিন এ দেশের মাটিতে জন্মলাভ করবে, ততদিন কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্নের ষড়যন্ত্রে সফল হতে পারবে না। ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আলিফ আমাদের ইমাম। আমরা আলিফদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দেশকে রক্ষায় জীবন বাজি রাখব, ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি জুলাই-গণ অভ্যুত্থানে শহীদদের কবর জিয়ারত ও শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ কর্মসূচির অংশ হিসেবে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের ফারাঙ্গা গ্রামে শহীদ আলিফের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ। এ সময় শহীদ আলিফের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী।

উল্লেখ্য, শহীদ এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ চট্টগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী ছিলেন। ছিলেন সরকারি আইন কর্মকর্তা এপিপি। ২০২৪ সালের ২৬ নবেম্বর উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের সন্ত্রাসীদের হামলায় চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় শাহাদাতবরণ করেন এডভোকেট আলিফ।

শহীদ আলিফের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফের পিতা জামাল উদ্দীন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ, কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও ছাত্রশিবিরের দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি আসহাব উদ্দিন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত আমির নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে ইসলামের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তি সবসময় ষড়যন্ত্র করে আসছে। কারণ, তাদের আধিপত্যবাদের সামনে সবচেয়ে বড়ো বাধা হচ্ছে এ দেশের তাওহিদি জনতা ও ইসলামী শক্তি। তাই ভারতীয় আধিপত্যবাদ এ দেশের ইসলামী শক্তিকে কোণঠাসা করে রাখতে চায়। আর এই আধিপত্যবাদী শক্তির দেশীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে ইসকন। এ দেশের আবহমান কাল থেকে চলে আসা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ইসকন। তারা দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি করে আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এরই অংশ হিসেবে তারা শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছে। কিন্তু এ দেশের তাওহিদি জনতা ও ইসলামী শক্তি ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সফল হতে দেবে না। এ দেশের ছাত্র, তরুণ, শ্রমিকসহ আপামর জনতা ভারতীয় আধিপত্যবাদকে রুখে দেবে, ইনশাআল্লাহ।

লোহাগাড়া উপজেলা আমির আসাদুল্লাহ ইসলামাবাদীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক আবুল কালামের সঞ্চালনায় শহীদ আলিফ স্মরণে আলোচনা সভা ও দুআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দুআ মাহফিলে মুনাজাত পরিচালনা করেন প্রবীণ আলেম, চুনতি কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুল হক নিজামী।

দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা নুরুল হোসাইন, জামায়াতে ইসলামীর লোহাগাড়া উপজেলার এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আ ন ম নোমান, ছাত্রশিবিরের সাবেক দক্ষিণ জেলা সভাপতি আইয়ুব আলী, সাবেক সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান, জামায়াতের চুনতি ইউনিয়ন আমির মাওলানা সলিম উল্লাহ, বটতলি শহর আমির অধ্যাপক জালাল আহমদ, পুটিবিলা ইউনিয়ন আমির নাজিম উদ্দীন, সাবেক চেয়ারম্যান কাজী নুরুল আলম, লোহাগাড়া উপজেলার দাওয়াহ ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা ছৈয়দ আহমদ, লোহাগাড়া সদর ইউনিয়ন সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, শ্রমিক নেতা রফিক দিদার প্রমুখ।