নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জে চাষাঢ়ায় ইজিবাইক ও অটোচালকদের সাথে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা সেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষে উভপক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। বিক্ষুব্দ ইজিবাইক ও অটোচালকরা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রকাশ করেন। এতে রাস্তার দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় চার ঘন্টা লিংক রোড অবরোধ করে রাখে অটোচালকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পরে স্কুল কলেজর শিক্ষার্থীসহ যাত্রীরা। বুধবার সকাল এগারোটায় এ ঘটনা ঘটে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ঘটনার মিমাংসা করা হয়।
অটোচালদের অভিযোগ যাত্রী নিয়ে চাষাঢ়ায় তাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় যাত্রী নামিয়ে অটো বা ইজিবাবইক ঘুরানোর সময় চাষাঢ়া মোড়ে গেলেই ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা সেচ্ছাসেবী ছাত্ররা তাদের গাড়ির চাকা লোহার রড দিয়ে ফুট করে দেয়। আবার অনেকের উপর হামলা করে মারধর করেন। বুধবার সকাল থেকে বেশ কয়েকজন অটোচালকের উপর ছাত্ররা হামলা করে আহত করে। চার-পাচঁটি অটো রিকশার গ্লাস ভাংচুর করে। পরে প্রতিবাদে অটো ও ইজিবাইক চালকরা ডিসি অফিসের সামনে অটোরিক্সা ও ইজিবাইক এলোপাথাড়ি রেখে সড়ক অববোধ করে বিক্ষোভ করে। চালকদের অভিযোগ ডিসি অফিসের সামনে ছাত্ররা তাদের উপর হামলা চালায় এবং কয়েকটি অটোরিক্সা ভাংচুর করে।
তবে ছাত্রদের অভিযোগ ইজিবাইক চালকরা কোন আইন মানে-না। তারা নির্ধারিত সীমানা ক্রস করে চাষাঢ়া গোলচত্ব গিয়ে ইজিবাইকে যাত্রী নেয়ার চেষ্টা করে এবং স্ট্যান্ড করে জ্যাম সৃষ্টি করে। তাদের কিছু বললেই তারা আমাদের (ছাত্র) উপর তেড়ে আসে। বুধবার অটোচালকরা হামালা চালিয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রকে আহত করে।
এদিকে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন যাতে সংঘাত আর না বাড়তে পারে সেজন্য দ্রুত স্থাণীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, অটোচালক ও ছাত্রদের প্রতিনিধি নিয়ে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে বৈঠকে বসেন। পরে স্টেক হেল্ডাদের সাথে আলোচনা করে সামনে যাতে আর এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে সেজন্য উভয় পক্ষকে ধৈর্যধারন করে চলার নির্দশনা দেন। একই সাথে ইজিবাইক চালকদের শহরে প্রবেশ না করে যে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা মেনে চলা এবং সংর্ঘষের আহতের চিকিৎসার ব্যবস্তা জেলা প্রশাসন থেকে করা হবে বলে আশ^স্ত করেন। একই সাথে একটি তদন্তকমিটি গঠন করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারবেন না
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোট দিতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ গতকাল বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, যাদের এনআইডি লক আছে তারা কেউই প্রবাসে বসে ভোট দিতে পারবেন না।
গত এপ্রিলে ইসির এনআইডি শাখার মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর নির্দেশনায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ১০ সদস্যের এনআইডি লক করা হয়।
যাদের এনআইডি লক করা হয়েছে তারা হলেন- শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রুপন্তি, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তার স্ত্রী শাহিন সিদ্দিক ও মেয়ে বুশরা সিদ্দিক।
ইসি সচিব বলেন, সংসদ নির্বাচনে ইন কান্ট্রি ও আউট অব কান্ট্রি ভোট হবে। যারা প্রবাসে আছেন, তারা অনলাইনে নিবন্ধন করবেন। এজন্য সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা ভোট দিতে পারবেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনার তো এনআইডি লক আছে। যাদের এনআইডি লক আছে তারা ভোট দিতে পারবেন না। মামলার কারণে বা অন্য কোনো কারণে পালিয়ে বা অন্যভাবে বিদেশে অবস্থান করছেন, তাদের ভোট দিতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে তাদের এনআইডি আনলক অবস্থায় থাকতে হবে।
আখতার আহমেদ বলেন, প্রবাসে বসে ভোট দিতে হলে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে এনআইডি নম্বর দিয়ে। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট নয়, এনআইডি বাধ্যতামূলক হবে। তাই যার এনআইডি লক থাকবে তিনি কী করে অনলাইনে নিবন্ধন করবেন? তিনি তো পারবেন না। যারা এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করবেন তারাই কেবল এই সুযোগ পাবেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। এছাড়া তার দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও অনেকে বিভিন্ন দেশে পালিয়েছেন।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। তবে তাদের ভোটাধিকার এখনো অক্ষুণœ রয়েছে। তারা দলীয় পরিচয়ে ভোটে অংশ নিতে না পারলেও ভোট দিতে পারবেন যারা দেশে আছেন। তবে যারা বিদেশে আছেন ও এনআইডি লক আছে তারা ভোটও দিতে পারবেন না। অবশ্য বিদেশে থাকা দলটির কতজনের এনআইডি লক আছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।