বর্ষার শুরুতেই সিলেট অঞ্চলে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। গত ১৮ মার্চ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন কৃষক বা কৃষিকাজে নিয়োজিত শ্রমিক। নিহতদের মধ্যে সুনামগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের, হবিগঞ্জে ৩ জন, মৌলভীবাজারে ১ জন এবং সিলেটে ২ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে খোলা মাঠে ধান কাটতে গিয়ে।
মৌসুমের শুরুতেই বজ্রপাতে এমন প্রাণহানির ঘটনা কৃষকদের মাঝে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করেছে। গোটা বিভাগজুড়ে বিশেষ করে হাওড়াঞ্চলের মানুষরা আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন। সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় একের পর এক বজ্রপাতের ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটছে মাঠের মানুষের। বিভাগের হাওড়াঞ্চলজুড়ে এখন এক ভিন্নরকম আতঙ্ক বজ্রপাত।
জানা যায়, সর্বশেষ গত সোমবার একদিনে সিলেট বিভাগে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। এরমধ্যে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় বজ্রপাতে রিমন তালুকদার নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়। হাওড়ে গরুকে ঘাস খাওয়াতে গিয়েছিলেন তিনি। এ সময় তার সাথে থাকা গবাদিপশুরও মৃত্যু হয়। এদিকে, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার হাওড়ে বজ্রপাতে দুর্বাসা দাস নামে এক ধান কাটা শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। অপরদিকে, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মাখন রবি দাস নামে আরো এক চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
এর আগে গত শুক্রবার সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বজ্রপাতে জীবন মিয়া নামে দুবাই প্রবাসী যুবকের মৃত্যু হয়। বিকেলে বাদ আসর মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার সেচনী গ্রামে ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় বজ্রপাতে প্রাণ হারান ২০ বছর বয়সী কৃষক আবু আইয়ূব। তিনি মাঠে ধানের খড় সংগ্রহ করছিলেন। এর একদিন আগে, ২২ এপ্রিল চন্ডিপুর গ্রামে ধান কাটতে এসে বজ্রাঘাতে মারা যান ভোলার রসুলপুরের ইকবাল হোসেন, যিনি দিনমজুর হিসেবে কাজ করছিলেন। একইদিন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীতে নৌকা চালাতে গিয়ে বজ্রাঘাতে প্রাণ হারান জিলান মিয়া।
এর আগেও, ১৬ এপ্রিল হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে শিবপাশা হাওরে ধান কাটার সময় মারা যান চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুই শ্রমিক-মনিরুল ইসলাম ও কপিল উদ্দিন। এছাড়া ১৫ এপ্রিল সুনামগঞ্জের ছাতক ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মারা যান দুই কৃষক-আমির উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন। ১৮ মার্চ ভোররাতে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলায় বজ্রপাতে প্রাণ হারান সাইদুল ইসলাম নামের এক যুবক, যিনি টিউবওয়েল থেকে পানি তুলছিলেন।