খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যাকান্ডের ক্লু এখনো পরিষ্কার না। তবে দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন। হত্যাকান্ডের সময়ে দুর্বৃত্তের একজনের মাথায় হেলমেট থাকলেও বাকী দু’জনের মুখ খোলা ছিল। হত্যাকারীরা মহেশ্বরপাশা পশ্চিম এলাকা দিয়ে ঢুকে ৩০ মিনিটের কিলিং মিশন সম্পন্ন করে আবার তেলিগাতি দিয়ে বের হয়ে যায়। হত্যাকান্ডের সময় মাহবুবের সাথে গাড়ি পরিস্কারের জন্য অংশ নেয়া ভ্যান চালককে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যার পর যুবদলের ওই নেতার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাতে এশার নামাজের পর জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার অপর একটি গ্রুপের সাথে তার দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিনের। এর আগেও একবার তাকে টার্গেট করে হামলা চালায় ওই গ্রুপের সদস্যরা। সেবার তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও এবার আর রক্ষা পাননি যুবদলের ওই নেতা। তার বিরুদ্ধে মহেশ্বরপাশা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার ওপর কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিল। আর সেই সুযোগ আর হাতছাড়া করেননি অপর পক্ষ। শুক্রবার জুমার নামাজে এলাকার মানুষ ছিল ব্যস্ত, আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী জানান, যুবদল নেতা মাহবুব দুপুরে তার ব্যক্তিগত গাড়ি পরিস্কার করছিলেন। এ সময়ে একজন ভ্যান চালককে তিনি ডেকে নিয়ে গাড়ি পরিস্কারের কাজে অংশ নিতে বলেন। ওই ভ্যান চালকের সামনে একটি মোটরসাইকেল আসা তিন ব্যক্তি তাকে লক্ষ্য করে গুলী ছোড়ে। দু’টি গুলীর একটি তার মুখের ডান পাশে এবং মাথার ডান পাশে বিদ্ধ হয়। এরপর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। পরবর্তীতে সন্ত্রাসীরা ওই ভ্যান চালককে লক্ষ্য করে আরও দু’টি গুলী ছোড়ে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। পুলিশ ভ্যান চালককে হেফাজতে নিয়েছে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার তাজুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হয়েছে। এলাকার একটি গ্রুপের সাথে তার দ্বন্দ্ব ছিল। মাদককান্ডে তার সংশ্লিষ্টতার জনশ্রুতি আছে। আমরা সকল বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছি। তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ডের সময়ে ৩ জন সন্ত্রাসী ছিল। তাদের সকলের হাতে পিস্তল ছিল। সেখানে মাহাবুবকে লক্ষ্য করে তারা ৭ রাউন্ড গুলী ছুড়েছে। হত্যাকারীরা মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া দিয়ে মাহাবুবের বাড়ির সামনে গিয়ে গুলী করে ৩০ মিনিটে হত্যাকান্ডটি সম্পন্ন করে তেলিগাতি হয়ে হাইওয়ে রাস্তা দিয়ে বের হয়ে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যায়। আমরা ঘটনাস্থলের পাশে একটি সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আরও একটি সংগ্রহের চেষ্টায় আছি। তবে এ মামলায় সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। হত্যাকন্ডের ব্যাপারে মুল আসামিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত কোন কিছুই পরিস্কার করে বলা যাচ্ছে না। এদিকে সন্ধ্যার পর যুবদলের ওই নেতার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।