আশাশুনি সংবাদদাতা : বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত বিজ্ঞপ্তীতে(৩০ জুলাই ২০২৫) সাতক্ষীরা-০৪ আসনের সীমানা নির্ধারণের প্রতিবাদে ও আশাশুনিকে সাতক্ষীরা-০৩ আসন হিসেবে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে আশাশুনিতে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি আশাশুনি উপজেলা জামায়াতেইসলামীর পক্ষ থেকে আশাশুনি প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জামায়াতের উপজেলা আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান ত্ষুার লিখিত বক্তব্যে জানান, সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণাংশে অবস্থিত আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা বাংলাদেশ স্বাধীনের পর হতে ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত ২টি আসন ছিল। ১টি সংসদীয় এলাকা সাতক্ষীরা-০৩ আশাশুনি আসন ও অপরটি সংসদীয় এলাকা সাতক্ষীরা-০৫ শ্যামনগর উপজেলা আসন ছিল। যা ছিল ভৌগলিকভাবে দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুর্যোগপূর্ণ উপকূল এলাকা বিবেচনায়। এরপর বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে জামায়াত ও বিএনপির বেজ এলাকা বাছাই করে শুধু ভোটার সংখ্যার বিবেচনায় বেশ কিছু সংসদীয় এলাকায় আসন কমিয়ে তাদের সুবিধামত কিছু জায়গায় আসন বৃদ্ধি করা হয়। তার-ই অংশ হিসাবে সাতক্ষীরা-০৩ ও ০৪ আসন গঠিত হয়ে ১টি আসন কমানো হয়। কিন্তু এবার আশাশুনি ও শ্যামনগরকে ১টি মাত্র সংসদীয় এলাকা সাতক্ষীরা-০৪ আসন করায় বিষয়টি সমাধান না হয়ে আরো জটিল হয়েছে। ফলে যেসব অসিবিধা দেখা দিয়ে তার মধ্যে বিস্তৃতিঃ উত্তর-দক্ষিণে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের মহিষাডাঙ্গা থেকে শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার ও পশ্চিমে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের সূবর্ণাবাদ থেকে শ্যামনগর উপজেলার যাতাকৈখালী ১২৭ কিলোমিটার দূরত্ব। ভৌগলিক অবস্থানঃ আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা দুটি সম্পূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল। অসংখ্য নদী-নালা দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় এই দুই উপজেলার মধ্যে কোনো সড়ক ও সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই।
আশাশুনি উপজেলার গ্রামগুলো কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, মরিচ্চাপ, বেতনা ও গলঘেষিয়া নদীর তীরে ৪টি দ্বীপে অবস্থিত। অপরদিকে, শ্যামনগর উপজেলা খোলপেটুয়া, মাদার, কপোতাক্ষ, কালিন্দী, কাকশিয়ালী, চুনা, আদি যমুনা ও মালঞ্চ নদী দ্বারা বেষ্টিত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত এলাকা প্রতি বছর এই অঞ্চলের ২০টির অধিক পয়েন্টে নদী ভেঙে বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়। বিগত বছরগুলোতে আইলা, আম্পান, রেমেল, বুলবুল, ফনি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতি এই উপজেলা দুটি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আশাশুনি উপকূলীয় উপজেলা হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৩৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাদ্বারা পরিবেষ্টিত। যে কারণে নাগরিক সেবা প্রদানে জনপ্রতিনিধিদের নাভিশ্বাস হয়।তিনি আরও বলেন, শুধু ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় না নিয়ে ভৌগলিক অবস্থান, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্ধস্ত উপকূলীয় এলাকা হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে আশাশুনি উপজেলাকে পৃথক সংসদীয় আসন হিসেবে ফিরিয়ে আনার জোর দাবী জানাচ্ছি। ফলে বিষয়টি এলাকার আপামর জনসাধারণের জীবন-মরণ লড়াই বিবেচনা করে আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণের কাছে উত্থাপন করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এ সময় উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওঃ আনওয়ারুল হক, সহ সেক্রেটারি মাওঃ আব্দুল বারী ও ডাক্তার রোকনুজ্জামান, অফিস সেক্রেটারী মাওঃ রুহুল কুদ্দুস, বাইতুলমাল সেক্রেটারি মাওঃ শহিদুল ইসলাম, কর্মপরিষদ সদস্য এবিএম আলমগীর পিন্টু, হাফেজ আব্দুল্লাহ, মাওঃ আঃ হাই প্রমুখ উপস্থিত ছিল।