যশোরে সংবাদপত্রের কালো দিবসের আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম হুশিয়ার দিয়ে বলেছেন, দেশে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে ফ্যাসিস্ট অপশক্তি ও তাদের দোসরদের বয়কট করতে হবে। তাদের সঙ্গে কোনো সামাজিক বা পেশাগত সম্পর্ক রাখার সুযোগ নেই। গতকাল সোমবার সকালে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, দেশের কিছু সাংবাদিক নির্লজ্জভাবে ক্ষমতাসীনদের দালালি ও তোষামোদির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘস্থায়ী করেছেন। বিনিময়ে তারা বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। তরুণদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে এখনো পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্র হরণ করে দেশে এক বিভীষিকাময় অবস্থা তৈরি করেছিলেন। সে সময় দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ রেখে চারটি তাঁবেদার পত্রিকাকে টিকিয়ে রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সেই দমন-পীড়নের অবসান ঘটিয়ে বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করেন।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা জানান, দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিএনপির হাত ধরেই এসেছে। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে নতুন নতুন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আলোচনা সভায় নার্গিস বেগম দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাংবাদিক সমাজের অবদান স্মরণ করেন। একই সঙ্গে অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদল সুবিধাভোগী সাংবাদিক তৈরি করে তাদের মাধ্যমে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন।
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জামায়াতে ইসলামী যশোরের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল এবং প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যশোর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক গোলাম রাসূল বলেন, ১৬ই জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর কলঙ্কিত এক অধ্যায়। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল স্বৈরাচারী শাসক দেশের সমস্ত পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে মাত্র ৪টি সরকারনিয়ন্ত্রিত পত্রিকা চালু রাখে। জনগণের কণ্ঠরোধ করে, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হত্যা করা হয়।
আজও নানা নামে, নানা উপায়ে সেই অপশক্তির উত্তরসূরিরা দেশে বাক-স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারকে দমন করছে। আমরা এই কালো দিবসে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের অবাধ স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার থাকার অঙ্গীকার করছি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি যশোর জেলা শাখার পক্ষ থেকে আমি এই কালো অধ্যায়ের প্রতিবাদ জানাই এবং সকল সাংবাদিক, গণমাধ্যমকর্মী ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় সংগ্রামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা আনোয়ারুল কবির নান্টু, আহসান কবীর, নূর ইসলাম, সাইফুর রহমান সাঈফ, সাইফুল ইসলাম সজল, তৌহিদ জামান, এম আইউব, এস এম ফরহাদ প্রমুখ।