DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

রাজশাহীতে জামায়াতের সেমিনার

দারিদ্র্য দূর করতে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই --- অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, নামাজ রোজার মতই যাকাত আদায় করা একটি ফরজ ইবাদত। একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ ও রোজার ফরজ বিধানকে আমরা সঠিকভাবে পালন করলেও যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অথচ দারিদ্র্য দূর করতে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

রাজশাহী ব্যুরো
Printed Edition
p8e
রাজশাহী: জামায়াতের যাকাতবিষয়ক সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান -সংগ্রাম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, নামাজ রোজার মতই যাকাত আদায় করা একটি ফরজ ইবাদত। একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ ও রোজার ফরজ বিধানকে আমরা সঠিকভাবে পালন করলেও যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। অথচ দারিদ্র্য দূর করতে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থার বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী নগরীর একটি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘সমাজ উন্নয়ন ও আত্মশুদ্ধিতে যাকাত ও রমাযান’ শীর্ষক একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরীর আমীর ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, প্রফেসর ড. আবুল হাশেম, ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মু. বিলাল হোসাইন। মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসাইনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরো বক্তব্য প্রদান করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান, মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহবুবুল আহসান বুলবুল, বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হাসানুজ্জামান হাসু, বিশিষ্ট ব্যাংকার ও ইসলামী ব্যাংক রাজশাহী জোনের ইনচার্জ নুরুল আমিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য সারওয়ার জাহান প্রিন্স, অধ্যাপক মাইনুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন সরকার, আশরাফুল আলম ইমন, তৌহিদুর রহমান সুইট, মাওলানা রুহুল আমিন, কামরুজ্জামান সোহেল, হাফেজ নুরুজ্জামান, সালাউদ্দিন আহমদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

অধ্যাপক মুজিব বলেন, যাকাত হলো সম্পদের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধি অর্জন করার সর্বোত্তম পন্থা এবং এটা দরিদ্র ও হতবঞ্চিতদের হক। এই হক তাদের কাছে নির্ধারিত নিয়মে পৌঁছানো জরুরি। পবিত্র কুরআনে যেখানে আল্লাহর পক্ষ থেকে নামাজের কথা বলা হয়েছে, সাথে সাথেই যাকাতের কথাও সেখানে বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত রয়েছে। সুতরাং সম্পদশালী ব্যক্তিকে ঈমানদার হতে গেলে অবশ্যই তার সম্পদের যথাযথ হিসাব করে নির্ধারিত যাকাত দিতে হবে। যাকাত ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্যেই আর্ত-মানবতার অর্থনৈতিক মুক্তি রয়েছে। আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই যাকাতভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি সাহেবে নেসাব গনকে রমযানের শুরুতেই যাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত বন্দিগীতে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান। সভাপতির বক্তব্যে ড. মাওলানা কেরামত আলী বলেন, ধনীদের সম্পদের উপর আল্লাহ বিত্তহীনদের অধিকার দিয়েছেন। যাকাত ধনীদের কাছ থেকে নিয়ে দরিদ্রদের মাঝে বন্টন করা হয়। ফলে এর মাধ্যমে অর্থনীতিতে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়। যাকাত আদায় ও বণ্টনের দায়িত্ব রাষ্ট্রের কিন্তু আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটা কায়েম নেই। প্রবন্ধ উপস্থাপক অধ্যাপক ড. মু. বিলাল হোসাইন বলেন, যাকাত ইসলামী অর্থব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের জনসাধারণের প্রায় ৯০% মুসলিম। অথচ দেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হ্রাস না পেয়ে বরং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে সমাজকে মুক্ত করতে ইসলামী শরী'আতের নির্দেশিকা পূর্ণ অনুসরণ করে যাকাতভিত্তিক ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাকাতের সুষ্ঠু বিলি বণ্টনের মাধ্যমে ত্রাণ, পূনর্বাসন, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ক্ষুদ্র ঋণ বাস্তবায়ন প্রকল্প ও শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালুর মাধ্যমে সুদমুক্ত বাংলাদেশ গঠন হবে। সুদ ব্যবস্থায় মানুষ শোষিত হয়। যাকাত ব্যবস্থায় মানুষের সম্পদ পরিশুদ্ধ হয়।