গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের কার্ড না পেয়ে আলু চাষিরা বিপাকে পড়েছে। বাজারে আলুর দাম পড়ে যাওয়ায় বাজারেও আলু বিক্রি করতে পারছে না। এদিকে অনেক আলু এখনো জমিতে রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সেই আলু তোলার উপযোগী হবে। কিন্তু বাজারে এখন দাম কম থাকায় ক্ষেতের আলু হিমাগারে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চাষিরা। তাই আগাম আলু সংরক্ষণের কার্ডের আশায় একের পর এক হিমাগারে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু কোথাও কার্ড পাচ্ছেন না। উপায়ন্তর না দেখে আলু সংরক্ষণের হাল ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক চাষি। চাষিদের দাবি, হিমাগার কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে মজুতকারীরা আলু সংরক্ষণের কার্ড আগেভাগেই হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে সাধারণ চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে , চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ১০৪ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৩১৮ হেক্টরের বেশি জমিতে। আর এ থেকে পাওয়া যাবে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৯৬ টন আলু। অন্যদিকে আলু সংরক্ষণের জন্য উপজেলায় ৪টি হিমাগার রয়েছে। এসব হিমাগারের ৩৬ হাজার ৫০০ টন আলু সংরক্ষণ করা যায়। ফলে চাষিদের উৎপাদিত অধিকাংশ আলুই থেকে যাচ্ছে সংরক্ষণের বাইরে। সংরক্ষণের সুযোগ না পেয়ে কৃষক তাঁদের ক্ষেতের আলু বাজারে বিক্রি করে দেন তাহলে বাজারে আলুর দাম আরও কমে যাবে।
হিমাগারে আলু রাখার জন্য এবার লুজ বুকিংয়ের রেট হচ্ছে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা আলু ৪০০ টাকা (প্রতি কেজি আলুর জন্য ৮ টাকা)। আলু সংরক্ষণ করতে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগাম কার্ড বিতরণ করে। এসব কার্ড নিতে প্রতি বস্তা আলুর বিপরীতে কৃষককে ৫০ টাকা আগাম গুনতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারে, সে কারণে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। হিমাগার মালিক সমিতি আমাদের জানিয়েছেন তাদের হিমাগারগুলোতে যথেষ্ট জায়গা ফাঁকা রয়েছে। কৃষকদের বীজ আলু রাখতে কোন সমস্যা হবে না। কালো বাজারে বুকিং কার্ড বিক্রি বা কাউকে হস্তান্তর করা যাবে না। কেউ অতিরিক্ত আলু মজুতের কারসাজি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।