জামালপুর সংবাদদাতা : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে তীব্র নদী ভাঙনে চরডাকাতিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে চরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষা ব্যাবস্থা। সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদী স্কুল ভবনের কাছে পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কয়েক সপ্তাহ আগে জিও ব্যাগ ফেলে স্কুলটি রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু যমুনার ভয়াবহ আগ্রাসী ভাঙনে নদীর তীব্র স্রোতে সেখানকার অনেক জিও ব্যাগ ধসে গেছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন। স্কুলটি রক্ষা করার জন্য জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই নদী ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছেনা। ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য নিলামে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সেই ভাঙন পরিদর্শন করেছি। স্কুলটি রক্ষার জন্য প্রাথমিক ভাবে ১০৮৭টি জিও ব্যাগ সেখানে ফেলা হয়েছে। তীব্র ভাঙনে সব ভেসে যাচ্ছে।
মীরসরাইয়ে বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প
মো. ছায়েফ উল্যাহ, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) : বাঙালির শত বছরেরর ঐতিহ্য মৃৎশিল্প। একেকটি শিল্প বিস্তারের পেছনে রয়েছে একেকটি দেশ বা জাতির অবদান। তেমনই একটি শিল্প হচ্ছে মৃৎশিল্প। প্রাচীনকাল থেকে বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। যারা মাটি নিয়ে কাজ করে পেশায় তারা কুমার বা পাল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন যেভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাতে তারা পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত। তারপরও দেশে এমন এলাকা বা গ্রাম আছে যেখানে এখনো বাংলার ঐতিহ্য তারা ধরে রেখেছে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনের ফলে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী। এ কারণে চাহিদা কম, কাঁচামালের দু®প্রাপ্যতা ও চড়ামূল্য, সর্বোপরি পুঁজির অভাবে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মীরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।
তাদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান অনুন্নত। আধুনিকতার প্রবল স্রোতে বাংলার প্রাচীন এই শিল্পের সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে বহু বছর ধরে জড়িত থাকা মানুষগুলো। বর্তমান সভ্যতার সাথে পেরে উঠছে না এই মাটির কারিগররা। আগে বিভিন্ন মাটির তৈরি দ্রব্যাদি ব্যবহার হলেও মেলামাইন, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে এসব সময়ের গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের নিপেন্দ্র চন্দ্র মাস্টার বাড়ির রাখাল চন্দ্র পাল জানান, ব্যবসা মন্দার কারণে আমাদের এখানকার মৃৎশিল্প প্রস্তুতকারী বাপ-দাদার এই পেশা ধরে রেখেছে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার। সামান্য আয়ে সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে বলে অভিযোগ করেন এই কুমার। ব্যবসা না থাকায় অনেকে এখন অন্য কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। কাজেই এ মৃৎশিল্প ধরে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের বাড়িতে ঢুকলে চোখে পড়বে মাটির তৈরি বিভিন্ন রকমের জিনিস। কোনোগুলো কাঁচা, আবার কিছু শুকিয়ে রাখা হয়েছে, কিছু পুড়িয়ে রং করেও বিক্রির জন্য তৈরি করা হচ্ছে।