তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা : সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ফলন ভালো হওয়ায় বেশ খুশি তালার কৃষকরা।
তালা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ১৯১৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে ধান চাষে একটু বেশী টাকা খরচ হলেও ফলন বেশী হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা।
সরেজমিনে কয়েকটা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সোনালি ধানে দুলছে সবুজ ফসলের মাঠ। কেও কেও ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছে। যাদের জমির ধান এখনো কাটেনি তাদের প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় দুলছে রূপালী ধানের শীষ। আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে জানিয়েছেন বেশীর ভাগ কৃষক। তবে কিছু কিছু সেচ কার্যক্রমে সমস্যার করেণে কারো কারো রোপা বোরা ধান নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আগামীতে সেচ ব্যব¯’ার গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট।
চলতি বছর বোরো মৌসুমে ইসলামকাটী ইউনিয়নে ১৫৬০ হেক্টর জমিতে বোরা ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। একই ইউনিয়নের পরানপুর গ্রাামের কৃষক শহিদুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, আমি ব্রিধান-২৮ জাতের ধান লাগিয়েছি, আশা করছি বিঘাপ্রতি ১৯/২০ মন করে ধান পাবো।
মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক দেলোয়ার হোসেন পাড় জানান, আমি এবার ব্র্যাক সীড শক্তি ও ৭৭৭ জাতের ধান আবাদ করেছি। সব কিছু ঠিক থাকলে বিঘাপ্রতি ৩০/৩২ মন ধান পাবো ইনশাআল্লাহ। তবে সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বেশী হওয়ায় অন্য সামগ্রীর দাম বেশি ছিল। এমনকি ধান রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বেশি। ধান কাটতে একজন শ্রমিককে ৫০০-৬০০ টাকা মজুরি দিতে হয়। বিষেশ করে একই সাথে ধান কাটার সময় হওয়ায় এবং গরমের কারণে বেশি টাকা দিয়েও মুজরি পাওয়া যা”েছ না।
মাগুরা ইউনিয়নের কৃষক জাহিদ হোসেন লালু পাড় বলেন, আমি এবার ব্র্যাক সীড-৭৭৭ জাতের ধান লাগিয়েছি ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিতে হয়েছে। চারা রোপণে খরচ বেশি হয়েছে। শ্রমিকদের বেশি মজুরি দিতে হয়েছে। সেইসঙ্গে সারও কিনতে হয়েছে বেশি দামে। তারপরেও এ বছর ১ বিঘা জমিতে ৩০/৩২ মণ ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন তালা উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে মোট ১৯১৫৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে।এর মধ্যে হাইব্রিড এসএল, ব্র্যাক সীড-৭৭৭, সিনজেনটা, এসিআই-১, ইস্পাহানী-৮, হীরা -১৯ সহ অরও অন্যান্য জাতের ধান আবাদ করে করে কৃষকরা আশানুরুপ ফলন পেয়েছে। বোরা ধান চাষাবাদে কৃষি অফিসের পক্ষ হতে কৃষকদের পাশে গিয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ বছর তালায় আশানুরুপ ধানের ফলন ধান ভালো হয়েছে। অনেক কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। বাম্পার ফলনে কৃষক খুশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষ বেড়ে যাওয়ায় ফলন বেশি হয়েছে। আবহাওয়া ও বাজারদর অনুকূলে থাকলে কৃষকরা এবার প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভবান হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।