আজ শুক্রবার বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সমাজতাত্ত্বিক প্রফেসর ড. এবনে গোলাম সামাদের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ইন্তিকাল করেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এবনে গোলাম সামাদের লেখালেখির সূচনা কবি সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত ‘সমকাল’ পত্রিকায়। আমৃত্যু দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিরলসভাবে লিখেছেন। তার উল্লেখ্যযোগ্য গ্রন্থ: ‘শিল্পকলার ইতিকথা’ (১৯৬০), ‘উদ্ভিদ সমীক্ষা’ (১৯৬৬), ‘নৃতত্ত্ব’ (১৯৬৭), ‘বাঙালীর জন্ম পরিচয়’ (১৯৭২), ‘ইসলামী শিল্পকলা’ (১৯৭৮), ‘বাংলাদেশে ইসলাম’ (১৯৮৭), ‘রাজশাহীর ইতিবৃত্ত’ (১৯৯৯), ‘নৃতত্ত্বের প্রথম পাঠ’ (২০০১), ‘বাংলাদেশে: সমাজ সংস্কৃতি রাজনীতি প্রতিক্রিয়া’ (২০০৩), ‘মানুষ ও তার শিল্পকলা’ (২০০৬), ‘প্রাথমিক জীবাণু তত্ত্ব’ (২০০৭), ‘বাংলাদেশের আদিবাসী এবং জাতি ও উপজাতি’ (২০১৩), ‘আত্মপক্ষ’ (২০১৪), ‘আত্মপরিচয়ের সন্ধানে’ (২০১৫), ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তর’ (২০১৭), ‘রাজনীতি বিষয়ক নির্বাচিত কলাম’ (২০১৭), ‘বিবিধ বিষয়ক নির্বাচিত কলাম’ (২০১৭), ‘আমাদের রাজনৈতিক চিন্তা চেতনা এবং আরাকান সংকট’ (২০১৮), ‘আমার স্বদেশ ভাবনা’ (২০২০) এবং তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয় ‘বাংলাদেশ কথা’ (২০২৩)। তিনি দৈনিক সংগ্রাম, নয়া দিগন্ত, আমার দেশ প্রভৃতি দৈনিকসহ অসংখ্য পত্রিকায় কলাম ও প্রবন্ধ লিখেছেন। এসব কলামে তিনি মুসলিম জাতিসত্ত্বা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে দৃঢ় অভিমত উপস্থাপন করেন।

এবনে গোলাম সামাদের জন্ম ২৯ ডিসেম্বর ১৯২৯। তাঁর পিতা মো. ইয়াসিন একজন স্টেশন মাস্টার ছিলেন। তাঁর মাতার নাম নছিরন নেসা। বড় বোন বাংলাদেশের আলোচিত লেখক ও সমাজকর্মী দৌলতুননেসা খাতুন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৪ ছেলে এবং ২ মেয়ের জনক। ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা সংঘ বিষ্ণুপুর থেকে বি. কোর্স পাশ করেন। যা তখনকার মাধ্যমিকের সমমান। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৪৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং তেজগাঁও কৃষি ইনিস্টিটিউট থেকে কৃষিবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করার পরে উদ্ভিদ রোগতত্ত্বের ওপরে গবেষণা করতে বিলেতে পাড়ি জমান। ফ্রান্সে প্ল্যান্ট ভাইরাসের ওপরে ৪ বছর গবেষণা করে পুয়াতিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৩ সালে দেশে ফিরে ১১ নভেম্বর ১৯৬৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কলকাতায় চলে যান। সেখানে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত ‘জয়বাংলা’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে ফিরে আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং এবং ১৯৯৫ সালে অবসর নেন। এবনে গোলাম সামাদ গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী শাহাদাৎ সরকার এই মহান মনীষীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন।