গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (জিসিসি) শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্ষাকাল ও কুরবানির ঈদ সামনে রেখে খাল, ড্রেন ও নালা খননসহ নানা উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
গতকাল সোমবার শহরের রাজবাড়ি রোডে এই কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন এ ডি সি রেভিনিউ মোহাম্মদ কায়সার খসরু, জিসিসির সাবেক কাউন্সিলর হান্নান মিয়া হান্নু, জিসিসির প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহিম খলিল, উপ সহকারী প্রকৌশলী আমজাদ, তানভীর হোসেন, রুহুল প্রমুখ।
প্রশাসক উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “আমরা একটি আধুনিক, বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন গাজীপুর গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্ষা ও ঈদকে সামনে রেখে জনগণের দুর্ভোগ কমাতে আমরা সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছি। সেনাবাহিনীর সহায়তায় খাল পুনঃখননের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে ড্রেন ও নালা পরিষ্কার এবং পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ লাইনের সম্প্রসারণ চলছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোটেশন পাঠানো হয়েছে খাল পুনঃখননের কাজে সহায়তা চেয়ে। পুনঃখননের জন্য প্রস্তাবিত খালগুলো হলো চিলাই খাল, বড়বাড়ি খাল, মধুমিতা খাল, টঙ্গী খাল, জৈনাবাজার খাল, নোয়াগাঁও খাল, তালতলা খাল। এসব খাল পুনঃখননের মাধ্যমে বর্ষার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত হবে এবং নগরের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা পাবে।
শীতলক্ষ্যা, লাবণ্যসহ নগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ও খালসমূহ পরিষ্কারেও শুরু হয়েছে প্রাথমিক কার্যক্রম। সেনাবাহিনীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মাটি অপসারণ, পানিপ্রবাহ স্বাভাবিককরণ ও অপরিকল্পিত বাঁধ অপসারণের কাজ চলছে।
কুরবানির ঈদ উপলক্ষে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ: অনলাইন টেন্ডারের মাধ্যমে স্বচ্ছ হাট ইজারা, পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, শতাধিক বর্জ্য অপসারণকারী গাড়ি ও প্রশিক্ষিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সমন্বয়ে বিশেষ টিম, ঈদের দিন দুপুর থেকে শুরু হবে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান, স্থায়ী ও অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম ও হটলাইন চালু থাকবে
প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমদ আরও বলেন, “আমাদের কার্যক্রম শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, আমরা বাস্তবভিত্তিক ও জনগণকেন্দ্রিক সমাধান বাস্তবায়নে কাজ করছি। জনগণের অংশগ্রহণ এবং সন্তুষ্টিই আমাদের মূল শক্তি।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এই ধরনের সুপরিকল্পিত উদ্যোগ আগামী দিনের গাজীপুরকে একটি মডেল শহরে রূপান্তরিত করবে।